করোনাভাইরাস সংক্রমণে দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান, অর্থাৎ হটস্পট রাজধানী ঢাকা। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকে রোববার (১২ এপ্রিল) পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশে মোট ৬২১ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়।
Advertisement
গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হওয়া ১৩৯ জন রোগীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকায়। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে যে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের বেশিরভাগই ঢাকার বাসিন্দা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছেন, শনাক্ত করা ৬২১ জন রোগীর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শতকরা ৫০ শতাংশ রোগী রাজধানী ঢাকার। তিনি করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নগরবাসীসহ দেশের সবাইকে ঘরে অবস্থানের অনুরোধ জানান।
রাজধানী ঢাকা হটস্পট হওয়ার তথ্যটি প্রতিদিনই স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে প্রচারিত হলেও, ঢাকার বাসিন্দা বিশেষ করে পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মানুষ তা আমলে নিচ্ছে না। তারা এখনও নানা অজুহাতে রাস্তার মোড়ে কিংবা কিছু কেনাকাটার অজুহাতে বাইরে বের হচ্ছে। কোথাও কোথাও সামাজিক দূরত্ব না মেনে আড্ডাও দিচ্ছে।
Advertisement
ঢাকা মহানগর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহল দিলেও তারা চোর-পুলিশ খেলার মতো তাদের দেখলে লুকাচ্ছেন এবং বেরিয়ে গেলে রাস্তার অলিগলিতে বের হচ্ছেন। বিভিন্ন এলাকা লকডাউন করা হলেও সেখানেও মানুষের অবাধ চলাফেরা করতে দেখা যায়। কোথাও কোথাও লোকজনকে দোকানে বিরিয়ানি কিনতেও দেখা যায়।
রোববার রাজধানীর ধানমন্ডি, কলাবাগান, রমনা, লালবাগ, চকবাজার, বংশাল ও সদরঘাট এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শহরের সর্বত্র করোনা ভীতিতে নীরব থাকলেও পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় বিশেষ করে অলিগলিতে অসংখ্য নারী, পুরুষ ও শিশুর উপস্থিতি রয়েছে। অন্যান্য এলাকায় সামাজিক দূরত্ব মেনে চললেও পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় মুখে মাস্ক ছাড়াও দল বেঁধে আড্ডা মারতে দেখা যায়।
পুরান ঢাকার একজন বৃদ্ধ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এলাকার পোলাপাইন কথা হুনে না, মইরা সাফ অইলে তহন হুনবো (শুনবে)। এগুলার কানাপট্টিতে থাবড়াইয়া (মেরে) ঘরের মইধ্যে (মধ্যে) হান্দান (ঢোকানো) দরকার।’
তবে ব্যতিক্রম রাজধানীর অন্যান্য এলাকা। বেশিরভাগ এলাকার রাস্তা-ঘাটে মানুষ নেই। মাঝে মাঝে রিকশাসহ দু-চারটি যানবাহন দ্রুত গতিতে ছুটতে দেখা যায়।
Advertisement
এমইউ/এমএসএইচ/এমকেএইচ