দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বব্যাপি সংস্কৃতিধর্মী সৃজনশীল কর্ম কপিরাইট বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে কপিরাইট অফিস সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান নিষ্ঠার সঙ্গে সেবা প্রদান করে আসছে। সম্প্রতি কিছু সংখ্যক ব্যক্তি কপিরাইট অফিসকে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে ডিপিডিটি (ডিপার্টমেন্ট অব পেটেন্ট, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেডমার্ক) এর সাথে একীভূত করার জন্য সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছে।সরকারকে এই প্রস্তাবে সাড়া না দিয়ে কপিরাইট অফিসকে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন রাখার দাবি জানিয়েছেন এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। বুধবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) এর সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান।‘কপিরাইট অফিস সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রাখার দাবি’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ কপিরাইট অ্যান্ড আইপি ফোরাম, এলসিএসগিল্ড, বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশান (বামবা), মিউজিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইবি), বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। এতে বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শিল্পী হামিন আহমেদ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক খোরশেদ আলম খশরু, মিউজিক্যাল অনার্স অ্যাসোসিশেশনের অব বাংলাদেশের সভাপতি আরিফুর রহমান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার, বাংলাদেশ কপিরাইট অ্যান্ড আইপি ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ব্যারিস্টার এবিএম হামিদুল মিজবাহ, শিল্পী এন্ড্রু কিশোর, সুজিত মোস্তফা প্রমুখ।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কপিরাইট অফিস এবং কপিরাইট আইনের আওতাধীন বিষয়বস্তু যেমন সংগীত, সাহিত্যকর্ম, চলচ্চিত্র, চিত্রকর্ম, কলা, আলোকচিত্র সমূহ সংস্কৃতির সাথে অতপ্রোতভাবে জড়িত এবং একে অপরের পরিপূরক, সেহেতু কপিরাইট অফিস এবং এর আওতাধীন বিষয়বস্তু সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকাই আইনসিদ্ধ।বিশ্বের ১২০টির বেশি দেশে, কপিরাইট অফিস সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে। ডিপিডিটি অফিস কপিরাইট অফিসকে নিয়ন্ত্রণ করে এরকম দৃষ্টান্ত একেবারেই বিরল। কপিরাইট অফিস সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে, বাংলাদেশের সংস্কৃতিকর্মী, সংস্কৃতিমনা এবং সংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ব্যাক্তিবর্গ সরকারের কাছে এটাই দাবি করে। বক্তারা বলেন, কপিরাইট অফিস সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করা হলে কপিরাইট বিষয়ক বর্তমানে চলমান উন্নয়নমূলক কার্যক্রম তুমুলভাবে ব্যহত হবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশেই মেধাসত্ব বিষয়ক আইনগুলোর মূলত দুইটি ধারা আছে; (১) ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইপি পেটেন্ট, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক) এবং (২) নন-ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইপি। কপিরাইট নন-ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইপি। তেল এবং পানি যেমন এক করা যায় না, ঠিক তেমনি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এবং নন-ইন্ডাস্ট্রিয়াল আইপি একসাথে চলতে পারে না। এলএ/এমএস
Advertisement