মুসতাক আহমদ ১. ট্রেনিংয়ের সময়ে সাংবাদিকদের গুরুরা বলে থাকেন, সাংবাদিকদের পায়ে লক্ষ্মী। ভিক্ষুকের মতো। যত হাঁটবেন একজন সাংবাদিক, ততই তিনি তথ্য পাবেন; যেমনি একজন ভিক্ষুক যত দুয়ারে পৌঁছায়, ততো তার ঝুলি ভরার সম্ভাবনা বাড়ে। ২. করোনাভাইরাসের এই মহামারিকালে জনগণকে রক্ষায় সরকার অঘোষিত ‘লকডাউন’ বাস্তবায়ন করছে। কয়েক দফায় তা ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানোর মাধ্যমে এক মাসে উন্নীত করা হলো, যা ২৬ মার্চ প্রতিপালন শুরু হয়েছে। ৩.জনগণকে ঘরের ভেতরে পাঠিয়ে বাইরে যারা দিবানিশি কাজ করছেন, তাদের মধ্যে প্রথমে আসে চিকিৎসক-নার্স ও তাদের সাপোর্টিং স্টাফদের নাম। পেশার প্রতি প্রতিশ্রুতিহীন, স্থূল বোধসম্পন্ন এবং দেশপ্রেমহীন ডাক্তারি সনদধারীরা ছাড়া বাকিরা রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের প্রতি সীমাহীন শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। এরপরই আসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কথা। সমস্ত ঝুঁকিকে তুচ্ছ জ্ঞান করে অভাবনীয় ধৈর্যসহ তারা কাজ করে যাচ্ছেন। বাঙালিকে কোনো কোনো লেখক রসিকতা করে বলেছেন ‘আত্মঘাতী বাঙালি’। এই আত্মঘাতী বাঙালি বুঝতে চায় না, কিসে তার মঙ্গল নিহিত। শহরের গলিতে আর গ্রামের মোড়ে গড়ে ওঠা দোকানে বাঙালি আড্ডা মেলাচ্ছে। সহকর্মী তারিকুল ইসলাম বলছিলেন, টঙ্গীর যে এলাকায় তিনি থাকেন সেটা লকডাউন ঘোষিত এলাকা। তবু সেই এলাকায় আড্ডাপ্রিয় (!) বাঙালি চা দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন। পুলিশ চলে এলে দোকান ছেড়ে পাবলিক ভোঁ দৌড় দেয়। দোকানি ফেলে দেয় ঝাপ। পুলিশ চলে গেলে ইঁদুরের মত গর্ত থেকে বেরিয়ে আবার সেখানে একত্রিত হয় আড্ডাপ্রাণ মানবেরা। শুরুর দিকের কয়েকদিন বাদে এমন চরিত্রের বাঙালির মাঝে মহাধৈর্যের সঙ্গে দাঁতে দাঁত কামড়ে রাখার মতো অবস্থার মধ্য দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। তিন নম্বরে আসছে সরকারের মাঠ প্রশাসনের কথা। মাঠ প্রশাসনের বেশিরভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী উপজেলার বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদেরও আমি কৃতিত্ব দেবো, যারা ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মত কাজ করছেন। এরপরই আসে গণমাধ্যমের কথা। সংবাদকর্মীরা উল্লিখিত তিনটি গোষ্ঠীর মতই সমস্ত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। সাংবাদিকরা যে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন তার প্রমাণ ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত চারজন সাংবাদিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন দুটি টেলিভিশন মাধ্যমের আর দুজন সংবাদপত্রের। এখানে রাজনীতিকরা কী ভূমিকা পালন করছেন সেটা উল্লেখ করতে চাচ্ছি না। কারণ, তাদের তো বাবার ভূমিকা থাকার কথা। বাবা সন্তানকে জামা-কাপড় কিনে দেবেন, বা দিলেন না- তেমন প্রেক্ষাপট ধন্যবাদ দেয়া না দেয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। দায়িত্ব পালন করলে করেছেন, না করে থাকলে করেননি। এ বিষটি এখানে আলোচ্যভুক্ত নয়। এখানে মূলত বলতে চাই তাদের কথাই, যারা রাজনীতিকদের নির্দেশনায় কাজ করার কথা। ৪.দৈনিক যুগান্তর ৮ এপ্রিল সংখ্যায় আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠায় একটি গ্রাফ প্রতিবেদন ছাপিয়েছে। তাতে আড়াই হাজার বছরের মহামারির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ মহামারি নতুন নয়। অন্যসব মহামারির চেয়ে বর্তমান মহামারির পার্থক্যটা হচ্ছে, এটা ভয়ানকভাবে ছোঁয়াচে। এর নানান রূপ। আক্রান্ত হওয়ার ৯-১০ দিনের মধ্যেও আপনার বোঝার উপায় নেই। উপসর্গ প্রকাশে বিলম্ব হয়। উপসর্গ প্রকাশ না হতেই আপনি বাহক হিসেবে অনেকের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারেন।। যমুনা টেলিভিশনের আমাদের প্রিয় সহকর্মীর ক্ষেত্রে সেটাই ঘটেছে। অফিস তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠালো। ১০-১১ দিন কাটিয়ে তার মনে হলো যে, তিনি আক্রান্ত নন। কাজে যোগ দিলেন। এরপর উপসর্গ প্রকাশ পেলো। আবার উপসর্গ নাও থাকতে পারে। লক্ষণ ছিল না, কিন্তু পরীক্ষায় শেরপুরে শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মচারীর (৩৫) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবরও প্রকাশিত হয়েছে (তথ্যের জন্য দেখুন ১০ এপ্রিল ২০২০ এর বাংলাদেশের প্রথম সারির সব পত্রিকার অনলাইন ভারসন)। সুতরাং, কতটা রুদ্ররোষ নিয়ে করোনাভাইরাসের আবির্ভাব ঘটেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ৫.মূলধারার গণমাধ্যমের বাইরে বর্তমানে আরেকটি গণমাধ্যম নিজের শক্তি-সামর্থ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সেটি হচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এই মাধ্যমের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো, আনসেন্সরড, অসম্পাদিত ও প্রচুর ভুয়া সংবাদ প্রচারিত হয় এতে। অপরদিকে সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হচ্ছে, নানান কারণে যেটা মূলধারার গণমাধ্যম প্রকাশ করতে পারে না, সেটা সে সাহসের সঙ্গে, সরাসরি, প্রতিবাদী চরিত্রে এবং দ্রোহসহ ত্বরিত প্রকাশ করে দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে অনেক কিছু জানতে পারি। এখানে দৃষ্টান্ত হিসেবে আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু মহিউদ্দিন রাসেলের (Mohiuddin Russell) ফেসবুকে দেয়া একটি স্ট্যাটাস উল্লেখ করতে চাই। সেটা হল- “৩টি ঘটনা নাড়া দিলো মনকে.... নারায়ণগঞ্জে এক গিটারিস্ট করোনার লক্ষণ নিয়ে মারা যাবার পর সারারাত গেইটের সামনে রাস্তায় লাশ ফেলে রেখেছিল তার পরিবার, পরে পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায়! কুমিল্লার নাঙলকোটে করোনার লক্ষণ নিয়ে মারা যাবার পর লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তার পরিবার। পরে পুলিশ এসে লাশ দাফন করে! কুর্মিটোলা হাসপাতালে করোনার লক্ষণ নিয়ে মারা যাবার পর দুই-তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করেও পরিবারের কেউ না আসায়, ফোন করে বন্ধ পাওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ দাফনের ব্যবস্থা করে। এটাই আমাদের সামাজিক বন্ধন? পারিবারিক বন্ধন? এইসব নিয়ে আমরা গর্ব করি বা করতাম? এবার হ্যাঁ আপনাকে বলছি একটু ভাবুন!!! >>>আপনি কার জন্যে রীতিমতো মিথ্যা, দুর্নীতি, চুরি, রাহাজানি, প্রতারণা, সুদ, ঘুষ, অন্যের হক নষ্ট, অথবা যেভাবেই হোক মানুষকে কষ্ট দিয়ে গড়ছেন সম্পদের পাহাড় ? ধন্যবাদ করোনাভাইরাসকেকত কিছুই না চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে আমাদের!!! পরিশেষে আল্লাহ তুমি আমাদের সবাইকে হেফাজত করো। আর অপেক্ষায় রইলাম নতুন এক সুন্দর পৃথিবী দেখার।” একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে রাসেল মনের ভাব অনায়াসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরেছেন, যেটা মূলধারার গণমাধ্যমে তার জন্য খুবই দুরূহ হতো। কেননা, জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গি বিশেষ করে মহামারিকালে সরকারের গৃহীত পলিসি এক্ষেত্রে অবশ্যই প্রয়োগ করতেন সম্পাদক। সেটা হতো তখন সুসম্পাদিত। যতই লেখা থাকতো ‘মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন’- তবুও এক্ষেত্রে জাতীয় সেন্সরশিপ পলিসি নজরে রাখা হতো এবং উপস্থাপিত তথ্যটি গুজব কি-না সেটি নজর নেয়া হতো। তখনই এটা হতো একটি আমলযোগ্য কনটেন্ট। ৬.তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে গুরুত্বপূর্ণ বলছি কেন? জবাব হচ্ছে, সরকারের নীতিনির্ধারক বলেন বা সরকারের মেশিনারিজ (যেমন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনপ্রশাসন) কিংবা গণমাধ্যম- সবাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিবেশিত তথ্যকে প্রাইমারি ইনফর্মেশন হিসেবে গ্রহণ করে থাকেন। তথ্যের যথার্থতার ভিত্তিতে ও সেটার আলোকে উল্লিখিত তিন পক্ষই যার যার মত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। এখানেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গুরুত্ব। তাই মূলধারার গণমাধ্যমের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কর্ণধারদেরও (ব্যক্তিবিশেষ) দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন। এ কারণেই সরকার ও সরকারের মেশিনারিজের পক্ষ থেকে মনিটরিং করা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সাংবাদিকরা অন্য সব ব্যবহারকারীর মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবগাহন করেন না। এজন্যই সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজবের বিরুদ্ধে এতোটা কঠোর। ৭.এ করোনাকালে চলমান পরিস্থিতিতেও উল্লিখিত চারটি গোষ্ঠীর (ডাক্তার-নার্সসহ হাসপাতালের কর্মী, সেনাবাহিনী-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, মাঠ প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবক এবং গণমাধ্যমকর্মী) বাইরে আরেকটি গোষ্ঠী মাঠে আছেন। সরকারি বিধি-নিষেধ আর শৃঙ্খলাবাহিনীর কঠোরতার মধ্যেও যারা ঘরে থাকতে পারেন না, তারা হলেন, বিভিন্ন ধরনের চালক, শ্রমিক, দোকানদার। অঘোষিত লকডাউন শুরুর কয়েকদিন পর সহকর্মী রাশেদ রাব্বির সঙ্গে আলাপ করছিলাম, আসলে এক্কেবারে বিপদে পড়েই এসব রিকশাওয়ালা-সিএনজিওয়ালা এবং শ্রমিকরা বের হয়েছেন। ঘরে খাবার থাকলে আসলে এদের বের হওয়ার কথা নয়। এ কথার জবাবে আমার এ সহকর্মী চমৎকার একটা জবাব দিলেন। তিনি বললেন, ‘আপনি-আমিও তো পেটের তাগিদেই বের হয়েছি।’ জবাবটা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে আমি লা-জওয়াব হয়ে যাই। কয়েক মিনিট নিশ্চুপ থেকে ভাবনার অতলে ডুবে যাই। ভেতর থেকে জবাব আসে, কথাটা তো শতভাগ সঠিক। ভেতর থেকে উৎসারিত এই কথাটি মুখে চলে আসে। এরপর আমি রাব্বিকে বলি, ‘হ্যাঁ, ঠিকই বলেছেন।’ তখন রাব্বি যোগ করলেন, ‘আপনার-আমার যদি ঘরে খাবার থাকতো, বা যাদের চাকরি গেলেও কয়েকমাস চলার সমস্যা হবে না, বা যাদের চাকরি যাওয়ার শঙ্কা নেই, বরং থাকার নিশ্চয়তা আছে- তারা কি কোথাও অফিস করতো বা করছে?’ আমি চোখ বন্ধ করলাম। এরপর সহকর্মীর এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করতে পারলাম না। ৮.আসলেই তো, দিনমজুর আর সাংবাদিকের মধ্যে বর্তমানে পার্থক্য কী? পেশাগত বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে আমরা ভিক্ষুকের সঙ্গে তুল্য, লাইফস্টাইলের দিক থেকে দিনমজুরের সঙ্গে। ‘জব সিকিউরিটি’র কথা বলবেন? সেটা গার্মেন্টসকর্মীর চেয়েও ঝুঁকিপূর্ণ (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে)। তার একটা সার্ভিস রুল আছে। তার ন্যূনতম নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্লাটফর্ম আছে, এ কারণে একটা সিস্টেমে তিনি চাকরি হারান। হুটহাট চাকরি চলে গেলে পাশে দাঁড়ানোর সমিতি আছে গার্মেন্টসকর্মীর। বিক্ষোভ করার, গার্মেন্টস বন্ধ করে দেয়ার, মালিকের কাছে দাবি তোলার প্লাটফর্ম আছে তার। সাংবাদিকের এর কোনোটি আছে বলে মনে হয় না। তাইতো ঘূর্ণিঝড়, দুর্বিপাক, মহামারি, হরতাল, সংঘর্ষ ইত্যাদির মধ্যেও সাংবাদিক দায়িত্ব পালন করেন, নেশার ঘোরে না হলেও চাকরি রক্ষার প্রয়োজনে। ব্যতিক্রম ছাড়া বর্তমান করোনাকালে প্রায় সব সাংবাদিক ঝুঁকি নিয়েই মাঠে আছেন। এখানে আমি আমার সহকর্মী ইকবাল হাসান ফরিদের (iqbal hasan farid) ১০ এপ্রিল রাত দেড়টায় দেয়া একটা স্ট্যাটাস উল্লেখ করতে পারি, যেটি তিনি লেটনাইট ডিউটি শেষ করে বাসায় ফিরে দিয়েছেন। সেটি হচ্ছে, ‘জানি না বিপদ এড়িয়ে কতদিন এভাবে রাত-বিরাতে ডিউটি করতে পারবো...। সাংবাদিকরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। আমাকে আল্লাহ রক্ষা করবেন তো করোনার ছোবল থেকে...” এই স্ট্যাটাসটিই বলে দিচ্ছে, আমরা যারা খবরের খোঁজে ও খবরের জন্য দৈনিক ঘর থেকে বের হচ্ছি, তারা কতোটা আতঙ্কের মধ্যে কাটাচ্ছি। ৯.কেউ কেউ বলবেন, সাংবাদিকতা পেশা নয়, ব্রত। চাকরি নয়, নেশা। আমি বলবো, এর কোনোটিই নেই আর অবশিষ্ট। পেশায় ২০ বছর পার করার পর অনেকটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলতে ইচ্ছে করে, কেউ বলতে পারবেন যে, সাংবাদিকতা এখন আর ব্রত ও নেশা আছে! সাংবাদিকতা এখন স্রেফ একটা চাকরি। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পলিসি, বলবানের ইচ্ছা ও প্রত্যাশা এবং অন্যান্য ফেনোমেনা (phenomena) যদি প্রতিবেদনের ভাগ্য নিরূপণ করে এবং সেই ইচ্ছার কাছে বিবেকতাড়িত সাংবাদিককে আত্মসমর্পণ করতে হয়, তাহলে সেটাকে চাকরি ভিন্ন অন্য কিছু বলাটা অন্যায়ই হবে। হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে কর্পোরেট কালচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেটা পেমেন্ট এবং চাকরির দৃষ্টিকোণ থেকে, অন্য দিক থেকে নয়। এ কালচারটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে চাকরির বিধি-বিধান অনুসৃত করার জন্য। তবে এটা ব্যতিক্রম। আর আপনারা আমার সঙ্গে একথায় দ্বিমত পোষণ করবেন না যে, ব্যতিক্রম চিত্র কখনো দৃষ্টান্ত হতে পারে না। বরং সাংবাদিকতা সম্পর্কে জানতে চাইলে বলা যাবে, পলিসি এবং বিদ্যমান বাস্তবতার বাইরে কোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ক্রিয়া করতে পারে বলে আমার জানা নেই। ১০.এমন অবস্থায়, সাংবাদিকতায় চাকরি করা আর হারানোর ঝুঁকির যে ডিলেমা, সার্বিক জাতীয় প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যম জগতে বিদ্যমান বাস্তবতায়, শ্রমিক এবং সাংবাদিকের মধ্যে আসলেই তেমন একটা পার্থক্য কি আছে? লেখক: সিনিয়র রিপোর্টার, দৈনিক যুগান্তর, সভাপতি, এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ইরাব)
Advertisement
এইচএ/এফআর