আইন-আদালত

আইনজীবীদের জন্য সুপ্রিম কোর্ট বারের ৫০ লাখ টাকার ফান্ড

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে পেশায় ক্ষতিগ্রস্ত আইনজীবীদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি (সুপ্রিম কোর্ট বার)।

Advertisement

সমিতির সদস্যদের চিকিৎসার জন্য সুদমুক্ত ঋণ, নবীন আইনজীবীদের প্রাথমিক পর্যায়ে ৫০ লাখ ফান্ড গঠনসহ ৫ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট বারের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটি।

সুপ্রিম কোর্ট বারের নবনির্বাচিত সভাপতি এএম আমিন উদ্দিন জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের রিলিফ ফান্ডে যে টাকা আছে তা দিয়ে আপদকালীন ফান্ড গঠন করছি,, যা আইনজীবীদের মাঝে দেয়া হবে।

সম্পাদক ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, এ ফান্ড পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করা হবে। সুপ্রিম কোর্ট বারের উন্নয়ন এবং আইনজীবীদের কল্যাণে নবনির্বাচিত কমিটি সম্ভব সব কিছুই করবে।

Advertisement

ফান্ড গঠন সংক্রান্ত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন আদালতের অনির্ধারিত বন্ধ এবং দেশ কার্যত লকডাউনে থাকায় পেশাজীবী হিসেবে আমরা এক অনিশ্চয়তার মধ্যে পতিত হয়েছি। বিশেষ করে আমাদের তরুণ বন্ধুদের বিষয়টি উদ্বিগ্ন করেছে বেশি। এমন এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত কার্যকরি কমিটি ১০ এপ্রিল এক অনানুষ্ঠানিক সভায় সমিতির সদস্যদের কল্যাণে কতিপয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

সিদ্ধান্তগুলো হলো-

১. সমিতির বিদ্যমান বেনেভোলেন্ট ফান্ড লোন রুলস, ২০০১ মোতাবেক কোনো সদস্য শুধুমাত্র ‘চিকিৎসা সুবিধার’ জন্য তার জমাকৃত অর্থের ৯৫% ঋণ হিসাবে নিতে পারেন। আমরা এটিকে শিথিল করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি যে, একজন আইনজীবী তার জমাকৃত টাকার ৯৫% অথবা ২৫ হাজার টাকা, যে অংকটি কম, সে পর্যন্ত বিনা সুদে ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। তিনি তিন বছর পর্যন্ত সময় পাবেন এটি পরিশোধ করার জন্য।

২. আমরা জানি বেনেভোলেন্ট ফান্ডের এই সুবিধা অনেক নবীন আইনজীবী পাবেন না। তাদের কথা বিবেচনা করে আমরা আপাতত ৫০ লাখ টাকার একটি আপদকালীন ফান্ড সৃষ্টির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। একজন সদস্যের আবেদনক্রমে কেস টু কেস বিবেচনায় এই ফান্ড থেকে তিন বছরের মধ্যে পরিশোধযোগ্য সুদমুক্ত ঋণের আদলে অর্থ বরাদ্দ করা হবে।

Advertisement

৩. করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় আইনজীবীদের জন্য বিশেষ অর্থ বরাদ্দ ও সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা চেয়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে দাবি জানানো হবে।

৪. ভারত ও পাকিস্তানের আদলে ভার্চুয়াল কোর্ট চালুর জন্য প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।

৫. সমিতির সামর্থ্যবান সদস্যদের ভলান্টারি কন্ট্রিবিউশনের মাধ্যমে ‘করোনা উদ্ভূত আইনজীবী সহায়তা ফান্ড’ সৃষ্টিতে সচেষ্ট থাকবো এবং একজন বিজ্ঞ সদস্যের প্রয়োজন মাফিক এই ফান্ড থেকে অনুদান হিসাবে অর্থ দেয়া হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, নতুন কমিটি আগামী ১৩ এপ্রিল দায়িত্ব গ্রহণ করে সিন্ধান্তগুলো কার্যকর করবে। বিজ্ঞপ্তিতে নবনির্বাচিত সম্পাদক ব্যারিস্টার কাজল বলেন, নির্বাচিত হওয়ার দুদিনের মাথায় গত ১৫ মার্চ সমিতির সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিনের নেতৃত্বে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করে আমাদের এক বছরের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করি।

সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি জানান, গত ৫ এপ্রিল আমাদের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে, সরকারি ছুটি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং এর ফলশ্রুতিতে এজিএম অনুষ্ঠিত না হওয়ায়, আমরা আগের কমিটির কাছ থেকে এখনও দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারিনি। আমরা আগামী ১৩ এপ্রিল দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারবো বলে আশা করছি।

তিনি বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতেও নতুন কমিটি আইনজীবীদের কল্যাণে সমিতির পক্ষ থেকে কি কি করা যায়, সেটা নিয়ে আলোচনা করেছে। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক নেতৃত্ব, সিনিয়র আইনজীবীসহ নানা পর্যায়ে পরামর্শ করা হয়েছে।

কাজল বলেন, দুঃসময়ে আমরা একে অপরের পাশে থাকবো এটা সকলেই প্রত্যাশা করি। আমরা আমাদের কার্যক্রমে শতভাগ সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই।

এফএইচ/এমএসএইচ/এমকেএইচ