সাহিত্য

আয়শা আকাশীর তিনটি কবিতা

নীরব স্বাক্ষরে ভূতের মিছিলভালোবাসা দিবসে ষোড়শীর হাত ধরেমুগ্ধতার মশাল জ্বেলেচাঁদপুরুষ বাড়ি ফিরেছিলো সূর্য ঘুমানোর সময়ে। কিশোরীর জন্মদিন আর বনভোজনে চাঁদপুরুষ হাস্নাহেনা ফোটা ও সোনালি রোদের সময়েস্পর্শ করেছিলো বুক, কপাল, হাতের আঙুল, শরীর।ভূতেরা এসেছিলো  দলবেঁধেনীরব স্বাক্ষরে ভূতের মিছিল শেষে আলতো জাগিয়ে টেনে নিয়েছিলো নতুন দ্রোহে অন্ধকার মিছিলে।বেদেরা ঘাটে নৌকা বেঁধে সবেমাত্র আলো জ্বেলেছিলো আপন মনেচাঁদপুরুষ তখন কবিতা আসরেকবিতার শরীর কেটে শুদ্ধ করছেবেদের সামনে সাপের দলঅনশন চলছে গত দু’দিন ধরে।চাঁদপুরুষ শুদ্ধি শেষে হাঁটছিলো বেদের নৌকা বাঁধা ঘাটে সামনে যুবতীর দল পিছনে অন্ধকারপায়ের নিচে ক্ষুধার্ত সাপ।ভূতের দল হাসছে, ততক্ষণে চাঁদপুরুষ মহুয়া বনেসামনে নীলজল পিছনে কাদামাঝখানে নরম বিছানাসাপের মুখে আস্ত ব্যাঙ। জোনাকীদের মিছিলে পথচলাআজ নিজের মধ্যে থাকবো তাইদিগন্ত ছোঁয়া হয়নি, ব্যস্ত মানুষের ভিড়ে হাঁটাও হয়নিচুপচাপ নিশ্চুপ নিঃশব্দে যেন অনন্ত অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছি।আজ নিজের সাথে কথা হবে তাইপদ্মাচরে জোনাকীদের মিছিলে আলো জ্বেলেহরতাল ডেকে অনশন চলছে। আজ তুমি আসবে তাইবহুপ্রতীক্ষা শেষে ভালোবাসবেস্পর্শতায় কামিনীফুলের ঝিরঝির বাতাসেশরীর কেঁপে কেঁপে হাসবে।কই, তুমিতো এলে না, নিজের মধ্যে থাকা, কথা বলাসবি ভোর হতেই রাতভর জোসনার মতো হারিয়ে যায়।আজ তুমি আসোনি, জানি আসবেও না তাইসমুদ্রের লোনাজলে পা ভিজিয়ে তপ্তপথ হেঁটে হেঁটেচালতা বন, কামরাঙার ঘ্রাণ আর পাখিদের ফেলেশহরের এক কোণে পড়ে থাকতেইচারপাশে আটকে থাকে বোধ-প্রেম-কর্তব্য।নিয়তিদেবী হাসে আর ফিসফিস স্বরে বলে-এই বেশ, আজো ঘরবন্দি।আজ জীবনজুড়ে অস্পষ্টতা তাইশর্ষে ফুলের গন্ধে দুঃখ সব জমিয়ে রেখেরোজ রোজ হৃদয়ের নিম্নভূমির জলাশয়ে কত অপমান, কত যন্ত্রণার জল আটকে রাখি।তবুও পরিচ্ছন্ন হৃদয়ের দায়-দেনাহীন রাশি রাশি মেঘজোনাকীদের মিছিলে আছড়ে পড়ে।এতো আয়োজন শেষে ভালোবাসবো বলে সবই তুচ্ছআজ ভালোবাসবো বলেই জোনাকীদের মিছিলে পথচলা।বোধে সাপ দংশনের সময়কবিতার মাতাল ছন্দে দিশেহারা হয়েবার বার ছুটে যাইবাংলা অভিধান    লেকের পাড়        মেঘদেবতার পুরনো ডায়েরিতে।একটু সময় যেতেইআধমরা ধানের পাশে দাঁড়িয়ে থাকি    গ্রীষ্মের দুপুর        আশ্বিনের রাত            নীল বিষাক্ত সাপ আরবোধ দংশনের সময় আমি হেরে যাইজিতেও যাই কখনও।এ কাজ সে কাজ শেষেনীল আকাশে ফিরে আসিবিছানাটাকে খুব আপন মনে হয়সাথে সুনীল মেলা থেকে কেনা একটি বড় মেয়ে পুতুল।মেঘদেবতার মতোই আমার জন্য অপেক্ষা করে না কেউবরং খাবার টেবিলে ইলিশ আর কাঁচকলার শর্ষে মাখানোতরকারি বাটির ঢাকনা তুলতেই আড়চোখে তাকায় সবাই।অবহেলার চরম মুহূর্তে এসেও বেঁচে থাকার জন্যনির্লজ্জ কুকুরের মতো খেয়ে নেই সবটুকুসাথে মেঘদেবতার কর্কট স্লোগান।বেঁচে থাকার আকুল স্বাদ আর গন্ধে আমি ভুলে যাই সব, হয়তো অনেকেই।এসইউ/এইচআর/পিআর

Advertisement