দেশজুড়ে

চিকিৎসকরা সর্দি-জ্বরকে করোনার উপসর্গ হিসেবে গুলিয়ে ফেলছেন

বর্তমানে আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে শিশুসহ সাধারণ মানুষ সর্দি, জ্বর ও পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেক চিকিৎসা কেন্দ্র, প্রাইভেট হাসপাতাল ও চিকিৎসকগণ অজ্ঞাতবশত এ রোগগুলোকে করোনার উপসর্গ হিসেবে গুলিয়ে ফেলছেন। এসব উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকদের কাছে গেলে তারা রোগীদের ভিন্ন চোখে দেখছেন। এতে শিশুদের অভিভাবক ও রোগীরা নানাভাবে বিব্রতবোধ করেন। সাধারণত শিশুসহ রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের সংকটময় মুহূর্তে যদি চিকিৎসকরা নিজেদের গুটিয়ে নেন তাহলে দেশের মানুষ কি করবে, তাদের গাইডলাইন কে দিবে? একমাত্র চিকিৎসকদের গাইডলাইনের দিকে চেয়ে আছে দেশের মানুষ। এখান থেকে চিকিৎসকদের মানসিকতা পরিবর্তন করে সকল চিকিৎসকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা শিশু হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডা. মো. শাহ্জাহান।

Advertisement

ঢাকা শিশু হাসপাতালে দায়িত্বের ফাঁকে সপ্তাহের দুইদিন (শুক্রবার ও সোমবার) গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার মাওনা চৌরাস্তায় শিশুদের চিকিৎসা সেবা দেন ডা. শাহজাহান। করোনাভাইরাসের আতঙ্কে উপজেলার প্রায় অর্ধশত হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ ব্যক্তিগতভাবে রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ করে দিলেও তিনি এখনও বন্ধ করেননি। শুক্রবার বেলা ১১টায় কথা হয় মাওনা চৌরাস্তায় নিজ হাতে গড়া “স্বদেশ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার” নামে একটি একটি বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র্রে।

তিনি জানান, রোগী বিশেষ করে মা ও শিশুদের কথা ভেবেই তিনি ব্যক্তিগতভাবে রোগীদের সেবা বন্ধ করেননি। অন্তত শিশুদের বেলায় না দেখে দূর থেকে চিকিৎসা দেয়া যেমন সম্ভব নয়, তেমনিভাবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া চিকিৎসা অনুচিত। ওষুধ প্রয়োগে সাবধান না হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে শিশুর। তাই এ সময়কালে বিশেষ করে শিশুদের প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে।

তার মতে, সংক্রামক ব্যাধিসহ নানা ধরনের হুমকির কথা ভেবেই তিনি চিকিৎসা পেশায় নিজেকে জড়িয়েছেন। দেশের দুর্যোগকালীন সময়ে পিছপা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই এ পেশার লোকজনের। বরং দিনের সময়কে আরো বেশি ব্যবহারের সুযোগ নিতে হবে, নিশ্চিত করতে হবে দেশের মানুষের মৌলিক চাহিদা অন্যতম চিকিৎসার বিষয়টি।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকরাই সাম্প্রতিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো আমাদের দেশে আঘাত হানা করোনা যুদ্ধের একমাত্র সৈনিক। চিকিৎসকদের এখন ঘরে থাকার সময় না, শুধু সরকারের দিকে চেয়ে না থেকে বরং নিজেদের উদ্যোগে কাজ শুরু করার সময় এখন।

যারা করোনার ভয়ে ব্যক্তিগতভাবে রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এ যুদ্ধে ঠিকই জয়ী হবো আমরা। জয়ী হবে আমাদের দেশ। কিন্তু দুর্যোগে নিজেদের গুটিয়ে নিয়ে, সুদিনে দেশ থেকে, দেশের মানুষের কাছ থেকে সুবিধা কীভাবে নেবেন তা এখনই তিনি ভেবে নিতেন বলেন।

ডা. মো. শাহ্জাহান ১৯৮৯ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে সার্জারিতে এমএস ডিগ্রি অর্জন করে বর্তমানে ঢাকা শিশু হাসপাতালে সার্জারি বিভাগের কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত আছেন।

শিহাব খান/এমএএস/জেআইএম

Advertisement