বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে কার্যত লকডাউন ঢাকা। সংক্রমণরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সরকারের তরফ থেকে নাগরিকদের ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। জরুরি সেবার প্রতিষ্ঠান ছাড়া বন্ধ সবই। করোনার কারণে বিপর্যস্ত সাধারণ জনজীবন। এমন অবস্থার মধ্যেই দুটি পৃথক ফার্মেসিতে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
Advertisement
করোনায় লকডাউনের আওতার বাইরে খোলা থাকা রাজধানীর দুটি পৃথক স্থানের ফার্মেসিতে ডাকাতির পর পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। দুই ঘটনাতেই পৃথক মামলা হয়েছে। করোনার দুর্যোগ মুহূর্তে যেন এই ধরনের অপরাধকর্ম আর না ঘটে সেজন্য পুলিশি টহল বাড়ানোর পাশাপাশি দোকানের ভেতরে আগন্তুক কিংবা ক্রেতাকে ঢুকতে না দিয়ে শাটারের বাইরে লোহার গ্রিলের ভেতর থেকেই লেনদেনের পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ সদরদফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা জাগো নিউজকে বলেন, করোনা সংক্রমণের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অপরাধের প্রকৃতিগত কিছু পরিবর্তন এসেছে। আমরা ইতোমধ্যে খেয়াল করেছি যে ওষুধের দোকানসহ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যেগুলো সন্ধ্যার পরও খোলা রাখার অনুমতি রয়েছে, এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছিনতাইয়ের ঘটনার ঘটেছে, পুলিশ এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছে।
‘এ বিষয়ে পুলিশ সজাগ রয়েছে। ইতোমধ্যে ওষুধের দোকান বা ফার্মেসিকেন্দ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ওষুধের দোকানকেন্দ্রিক পুলিশের মোবাইল টিম, পেট্রোল টিমের টহল বা মুভমেন্ট বাড়ানো হয়েছে। এর বাইরে শহরকেন্দ্রিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা রয়েছে, সেগুলো পুলিশ মনিটরিং ও সিসি ফুটেজের সহায়তায় ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
Advertisement
সোহেল রানা বলেন, ওষুধের যে দোকানগুলো খোলা রয়েছে, এর মালিকদের আমরা পরামর্শ দিচ্ছি, যাদের পক্ষে সম্ভব তারা যেন নিরাপত্তার মধ্যে থেকে লেনদেন করেন। বিশেষ করে শাটারের বাইরে আলাদা লোহার গ্রিল রয়েছে, লোহার গ্রিলের ভেতর থেকেই যেন তারা লেনদেন করেন। একান্ত আবশ্যক না হলে আগন্তুক ও ক্রেতাদের ওষুধের দোকানের ভেতরে প্রবেশ করতে না দিলেই ভালো।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা চেষ্টা করছি সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণের জন্য, এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে। আমরা যখনই টের পাচ্ছি বা খবর পাচ্ছি তখনই তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা নিকটস্থ পুলিশের টিমকে পাঠিয়ে অপরাধীদের ধরার চেষ্টা করছি।
করোনার বিস্তাররোধে সরকারের সাধারণ ছুটি ঘোষণায় জনশূন্যতার সুযোগে গত ১ এপ্রিল রাত সাড়ে ১২টা থেকে ১টার মধ্যে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কলেজগেট এলাকার বিল্লাহ ফার্মায় ডাকাতি করে দুর্বৃত্ত চক্র।
ভুক্তভোগীরা জানান, হঠাৎ একটি ট্রাক ব্যাক গিয়ার দিয়ে ফার্মার সামনে এসে দাঁড়ায়। সেখান থেকে মাথায় গামছা বাঁধা ও মুখে মাস্ক পরা দু’জন চাপাতি ও একজন রড নিয়ে দোকানে প্রবেশ করে। সেখানে আরমান নামে এক ক্রেতা, ফার্মেসির মালিক নাহিদ বিল্লাহ ও ইউসিবিএল ব্যাংকের এটিএম বুথের সিকিউরিটি মো. সোহাগকে মারতে মারতে দোকানের পেছনে নিয়ে যায়। এরপর ডাকাতরা আরমানের পকেটের মানিব্যাগ ও মোবাইল এবং ফার্মেসিতে থাকা ল্যাপটপ ও নগদ টাকা নিয়ে দ্রুত চলে যায়।
Advertisement
চার দিনের মাথায় ৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর খিলগাঁও থানাধীন সি ব্লকে লাজ ফার্মার একটি শাখায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। মাত্র ২-৩ মিনিটেই তারা ওই দোকান থেকে ২ লাখ টাকা, মোবাইল ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
দুই ঘটনাতেই সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের করেছে ক্ষতিগ্রস্ত ফার্মেসির মালিকপক্ষ।
জেইউ/এইচএ/পিআর