জাতীয়

করোনা দুর্যোগে পুলিশকে ২০ নির্দেশনা

করোনাভাইরাস প্রতিরাধে ও মোকাবিলায় এবং নিজেদের সুরক্ষার লক্ষ্যে পুলিশ সদস্যদের করণীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কিত ২০ নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।

Advertisement

সম্প্রতি পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে আইজিপি এই নির্দেশনা লিখিত আকারে পাঠান। শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা।

নির্দেশনাগুলো হলো;

১. মাঠপর্যায়ে যে কোনো দায়িত্ব পালনের সময় এবং মানুষের কাছাকাছি গেলে মাস্ক পরিধান করতে হবে। এ ছাড়া, মামলা তদন্ত, আসামি গ্রেফতার বা আসামি পরিবহনকালে মাস্ক ও গ্লাভস পরিধানসহ পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

Advertisement

২. কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির বাড়ি পরিদর্শন বা এ সংক্রান্ত নিরাপত্তা দায়িত্ব পালনের সময় মাস্ক ও গ্লাভস পরিধান করতে হবে। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে, ব্যক্তিগত নিরাপত্তাসামগ্রী (পিপিই) পরিধান করতে হবে।

৩. নাক ও মুখ ঢেকে যথানিয়মে মাস্ক পরতে হবে। ব্যবহার শেষে মাস্ক, গ্লাভস ও পিপিই যথানিয়মে বিনষ্ট করতে হবে।

৪. অসাবধানতাবশত এবং উপযুক্ত প্রস্তুতি বা অনুমতি ছাড়া কোনো আক্রান্ত ব্যক্তি, কোয়ারেন্টাইনড ব্যক্তি বা মৃত ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়া যাবে না।

৫. দায়িত্ব পালনকালে যথাসম্ভব লোকজনের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে। পরিচিত বা অপরিচিত কারও সাথেই হাত মেলানো বা কোলাকুলি করা যাবে না।

Advertisement

৬. দায়িত্ব পালনের সময় মানুষ, আসবাবপত্র, দেয়াল, পানির ট্যাপ, দরজা ইত্যাদিসহ নিজের শরীরের বাইরে যে কোনো বস্তু বা দ্রব্যের অনাবশ্যক স্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে।

৭. হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু দিয়ে বা কনুইয়ের ভাজে নাক ও মুখ ঢাকতে হবে। ব্যবহৃত টিস্যুটি তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকনাযুক্ত ময়লার ঝুড়িতে ফেলে সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে যথানিয়মে হাত ধুতে হবে।

৮. সাবান ও পানি দিয়ে উভয় হাত কবজি থেকে নখ পর্যন্ত ন্যূনতম ২০ সেকেন্ড সময় ধরে পরিষ্কার করতে হবে। ঘন ঘন নিয়মানুযায়ী হ্যান্ডস্যানিটাইজার দিয়ে ভালো করে হাত পরিষ্কার করতে হবে।

৯. ডিউটি শেষে ব্যারাক বা বাড়িতে ঢোকার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। সম্ভব হলে, জীবানুনাশক স্প্রে দিয়ে জুতাসহ সারা শরীর জীবানুমুক্ত করতে হবে। ডিউটি শেষে ব্যবহৃত ইউনিফর্ম সাবান দিয়ে ধুতে হবে এবং সাবান দিয়ে গোসল করতে হবে।

১০. সাবান দিয়ে হাত না ধুয়ে কোনো অবস্থাতেই চোখ, নাক ৰা মুখে হাত দেয়া যাবে না।

১১. বিশেষ প্রয়োজন না হলে ব্যারাক বা বাসার বাইরে যাওয়া যাবে না।

১২. ব্যারাকে বা বাসায় কোনো অতিথি গ্রহণ বা অন্যের বাড়িতে অতিথি হয়ে গমন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

১৩. গণপরিবহন ও জনসমাগমস্থল যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।

১৪. জ্বর ও কাশির সাথে শ্বাসকষ্ট হলে তাৎক্ষণিকভাবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

১৫. পুলিশের কোনো সদস্য কোয়ারেন্টাইনে থাকলে তার ব্যবহার্য জিনিসপত্র (গ্লাস, প্লেট, তোয়ালে, বিছানার চাদর ইত্যাদি) অন্য কেউ ব্যবহার করবে না। তাকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। কোয়ারেন্টাইন্ড ব্যক্তির জন্য পৃথক টয়লেট ও বাথরুমের ব্যবস্থা করতে হবে। ১৬. অপরিচিত কেউ বিনামূল্যে মাস্ক অফার করলে তা নেয়া ঠিক হবে না। অজ্ঞানপার্টির তৎপরতা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।

১৭. রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি বেশি করে বিশুদ্ধ খাবার পানি ও ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

১৮. বাইরের খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে।

১৯. মনে রাখতে হবে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সংক্রান্ত স্বাস্থ্যগত বিষয়াদি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের। পুলিশ সদস্যরা শুধু নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

২০. আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন ও সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করতে হবে।

জেইউ/জেডএ/পিআর