করোনাভাইরাসের কারণে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বন্ধ থাকলেও ২৭৮টি কারখানার মালিক তাদের শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন পরিশোধ করেছেন।
Advertisement
শুক্রবার বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ সূত্রে জানা গেছে, জরুরি পণ্য, মাস্ক ও চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামসহ (পিপিই) করোনা প্রতিরোধী সামগ্রী তৈরি করতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত (৯ এপ্রিল) ২৬টি পোশাক কারখানা খোলা ছিল। বৃহস্পতিবার সাভার আশুলিয়ায় ৬টি কারখানা খোলা ছিল। গাজীপুরে ১৩টি এবং চট্টগ্রামে খোলা ছিল ৭টি কারখানা। তবে করোনার কারণে লকডাউন থাকায় বুধবারের মতো বৃহস্পতিবারও কোনো কারখানা খোলা রাখা হয়নি নারায়ণগঞ্জে।
এর আগে গত ৬ এপ্রিল পোশাক মালিকদের বড় দুটি সংগঠন বিজিএমইএ ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। সরকারি ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের সব পোশাক কারখানা আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এছাড়া শ্রমিক-কর্মচারীদের মার্চ মাসের বেতন আগামী ১৬ এপ্রিলের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
Advertisement
যৌথ বিবৃতিতে শর্ত দিয়ে কারখানা খোলা বিষয়ে বলা হয়, রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান যাদের জরুরি রফতানি কার্যাদেশ রয়েছে এবং যেসব কারখানায় করোনার সরঞ্জামাদি, মাস্ক চিকিৎসকদের পিপিই এবং করোনা প্রতিরোধী সামগ্রী তৈরি করছে, এমন কারখানাগুলোকে তাদের শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে প্রয়োজনে খোলা রাখতে পারবে।
এক্ষেত্রে স্ব স্ব অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ/বিকেএমইএ), কলকারখানা পরিদর্শন অধিদফতর এবং শিল্প পুলিশকে কারখানা খোলা রাখার বিষয়টি জানাতে হবে।
বিজিএমইএর সব শেষ তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) সকাল ১০টা পর্যন্ত দেশের তৈরি পোশাক খাতের এক হাজার ১২৫টি কারখানায় ৯৭ কোটি ১০ লাখটি পোশাক পণ্যের রফতানি আদেশ বাতিল ও স্থগিত করা হয়েছে। যার আর্থিক পরিমাণ ৩ দশমকি ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৬ হাজার ৫২০ কোটি টাকা, বিনিময় হার ৮৫ টাকা ধরে)। রফতানি আদেশ বাতিল হওয়া এসব কারখানায় ২২ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক কাজ করে।
বিজিএমইএর তথ্য বলছে, দেশে বর্তমানে পোশাক কারখানা রয়েছে চার হাজার ৫৬০টি। যেখানে কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। দেশের মোট রফতানির পোশাকের অবদান ৮৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। তবে হোমটেক্স, টেরিটাওয়েলসহ এ খাতের অন্যান্য রফতানির উপখাত হিসাব করলে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ৮৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। এক দশক ধরে দেশের জিডিপি ৬ শতাংশের উপরে থাকার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান রাখছে এ পোশাক খাত। তাই তৈরি পোশাকের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পুরো অর্থনীতিতে।
Advertisement
এসআই/এমএসএইচ/এমএস