আজ ১০ এপ্রিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল দিন। এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশের গণপরিষদের ক্ষমতা বলে এবং যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি হিসেবে এ-সংক্রান্ত ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক ইউসুফ আলী। ঘোষণাপত্রটি ১৯৭২ সালের ২৩ মে বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।
Advertisement
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানোর পর একই বছরের এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা হয়।
একই সঙ্গে প্রবাসী সরকার এক অধ্যাদেশ জারি করে আইনগত দিক দিয়ে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, ‘এদিন পাকিস্তানের নির্বাচিত জাতীয় এবং প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি গোপন স্থানে মিলিত হয়ে প্রবাসী সরকার গঠন করেন। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি এবং সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি (অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি) নির্বাচিত করা হয়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম পরে তাজউদ্দিন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন।’
Advertisement
মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরা হলেন-এম মনসুর আলী (অর্থ বাণিজ্য ও শিল্প) এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান (স্বরাষ্ট্র, সরবরাহ, ত্রাণ, পুনর্বাসন ও কৃষি)।
এইচ টি ইমাম বলেন, ১০ এপ্রিল সরকার গঠনের পর ১১ এপ্রিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তাজউদ্দিন আহমদ একটি বেতার ভাষণ দেন। এ ভাষণে তিনি দেশব্যাপী পরিচালিত প্রতিরোধ যুদ্ধের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। এছাড়া ১৭এপ্রিল মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের তারিখ নির্ধারিত হয়।
মেহেরপুরের সীমান্তবর্তী গ্রাম বৈদ্যনাথতলায় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। শপথ গ্রহণের পরই তাজউদ্দিন আহমদ এ স্থানের নাম দেন মুজিবনগর। পরবর্তী সময়ে প্রবাসী সরকার মুজিবনগর সরকার হিসেবেই পরিচিতি লাভ করে।
এদিকে ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রীরা শপথ নিলেও ১৮ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদের প্রথম সভায় মন্ত্রীদের দফতর বন্টন করা হয়।
Advertisement
মুজিবনগর সরকারের সফল নেতৃত্বে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় অর্জনের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতা লাভ করে।
এফএইচএস/এসআর/এমএস