প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী ১৫ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ। আর করোনা থেকে মুক্ত হয়ে এসব মানুষরা জানাচ্ছেন নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা।
Advertisement
তেমনই একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত লন্ডন প্রবাসী তরুণী রিয়া লাখানি। করোনা আক্রান্তের পর এর থেকে মুক্ত হয়ে তিনি জানালেন অভিজ্ঞতার কথা।
তিনি বললেন, ‘মরতে বসেছিলাম। কীভাবে যে ফিরে এসেছি, তা বোধহয় একমাত্র ঈশ্বরই জানেন।’
মূলত খাদ্যনালিতে অস্ত্রোপচারের জন্য সপ্তাহ কয়েক আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন রিয়া। অস্ত্রোপচারের পর হঠাতই তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরে জ্বরও আসতে শুরু করে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, অস্ত্রোপচারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে। তবু সচেতনতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তার লালারসের পরীক্ষা করা হয়।
Advertisement
রিপোর্টে দেখা যায়, রিয়া করোনা পজিটিভ। এরপরই তড়িঘড়ি তার চিকিৎসা শুরু হয়। গোটা ওয়ার্ড ফাঁকা করে দেয়া হয়। কিন্তু যতদিন যাচ্ছিল, ততই অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন রিয়া। ফলে লন্ডনের করোনার সবচেয়ে বড় চিকিৎসা কেন্দ্রে তাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে অবশেষ সুস্থ হয়ে ফিরেছেন তিনি।
ইতিমধ্যে ব্রিটেনে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে সাত হাজার বেশি। চিকিৎসাধীন খোদ দেশটির প্রধানমন্ত্রীও। এমন সময় অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন সদ্য সুস্থ হয়ে ওঠা ভারতীয় বংশোদ্ভূত রিয়া লাখানি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সেরে ওঠার ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা জানান রিয়া।
তার কথায়, ‘শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক একটা প্রক্রিয়া। ওই কয়দিন কীভাবে প্রশ্বাস নিতে হয়, আর নিশ্বাস ছাড়তে হয়, সেটাই ভুলে গিয়েছিলাম। যন্ত্রণায় কাতরাতাম। যন্ত্রণা কমাতে অক্সিজেনের সঙ্গে মরফিন দেয়া হতো আমাকে।’
রিয়া আরও জানান, ‘মাঝরাতে উঠে বসে থাকতাম শ্বাস নিতে। মনে হতো আর হয়তো ভোর দেখতে পাব না। কিন্তু একমাত্র চিকিৎসক আর নার্সদের চেষ্টা আমি আবার বেঁচে ফিরেছি। ওরাই আসল হিরো।’
Advertisement
আপাতত হাসপাতাল থেকে ফিরে বাড়িতেই রয়েছেন রিয়া। যদিও চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে সেলফ আইসোলেশনে রয়েছেন তিনি। স্বামী, প্রিয়জন কারোর সঙ্গেই দেখা হচ্ছে না।
রিয়া বলছেন, ‘এ আর এক যন্ত্রণা। প্রিয়জনদের কাছে থেকেও তাদের পাশে বসতে পারছি না। তারা কাছে আসতে পারছে না। কবে যে আবার ওদের কাছে পাব কে জানে!’
উল্লেখ্য, চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত ১৫ লাখ ৪২ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। আর প্রাণ গেছে প্রায় ৯১ হাজারের বেশি মানুষের।
এফআর/পিআর