জাতীয়

ত্রাণ না পেয়ে ক্ষুব্ধ, সেনা-র‌্যাব দিয়ে বিতরণের দাবি

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে অসহায় হয়ে পড়া রাজধানীর মতিঝিল এলাকার বস্তিবাসী সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ত্রাণ না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার গরিব-অসহায় ব্যক্তিদের জন্য সাহায্য দিলেও তারা পাচ্ছেন না। নেতা কিংবা ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছে ত্রাণ দিলে তারা এটা কখনো পাবেন না অভিযোগ তুলে বস্তিবাসী দাবি করেন, সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ কিংবা সরকারি চাকরিজীবীদের মাধ্যমে যেন ত্রাণ বিতরণ করা হয়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) জাগো নিউজকে পেয়ে তারা এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। করোনাভাইরাসের কারণে সরকার সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন দিনে এনে দিনে খাওয়া লোকজন। রাস্তাঘাটে মানুষ চলাচল নেই বলে ভিক্ষা মিলছে না ভিক্ষুকদেরও। এই অবস্থায় অনেকের কাছে সরকারি ত্রাণই বেঁচে থাকার অবলম্বন।

মান্ডা এলাকা ঘুরে শাক-সবজি তুলে সেগুলো মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের সামনের রাস্তায় বিক্রি করছিলেন কয়েকজন নারী। সেসব বিক্রি হলে কিছু নিয়ে গেলে বাচ্চারা খেতে পারবে বলে তারা জানান। তাদের অভিযোগ, এলাকার কাউন্সিলরের কাছে গেলেও তারা কোনো সাহায্য পাননি। এমনকি তাদের বের করে দেয়া হয়।

বাংলাদেশে ব্যাংকের সামনে এক প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক ক্ষোভ প্রকাশ করে জাগো নিউজকে জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে না থাকায় তারা কোনো ধরনের সাহায্য পাচ্ছেন না। মুখ চিনে চিনে সাহায্য দেয়া হচ্ছে। যারা পাচ্ছেন অনেকবার পাচ্ছেন। যারা পাচ্ছেন না তারা একদম পাচ্ছেন না।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘সরকার তো আমাদের জন্য কষ্ট করছে। সরকার যদি আমাদের জন্য ১০ টাকাও বরাদ্দ দেয় আমরা তো কম করে হলেও ২ টাকা পাই। আর পুলিশ, সেনাবাহিনী, র‌্যাব বা সরকারি মানুষের মাধ্যমে ত্রাণ দিলে আমরা পামু।’

তিনি আরো বলেন, ‘সোনালী ব্যাংকের এমডি স্যার আমাকে দুই হাজার টাকা দিয়েছিলেন। সেটাই খাচ্ছি। আর কোনো সাহায্য পাই নাই। চাল ডাল কিচ্ছু পাই নাই। গেলেও বলা হয় দেয়া শেষ।’

সেখানকার এক রিকশাচালক বলেন, ‘ঘর ভাড়ার জন্য চাপ দিছে মালিক। ঘর ভাড়া কোত্থেকে দিব? এখন সরকার যদি সাহায্য দেয় আমরা বাঁচব, না হলে বাঁচব না। এলাকার কাউন্সিলরের কাছে গেলে তারা বলেন সাহায্য বা খাদ্য আসে নাই। না এলে আমরা কোত্থেকে দিমু। আমরা বলছি সরকার আপনার হাতে, আপনারা আমাদের সাহায্য দেন। তারা বলে না খেয়ে মরগে! আমরা কী করব।’

তিনি বলেন, ‘সরকার একটা ভুল কাজ করছে। এই সাহায্যটা যদি সরকারের লোকের কাছে দিতো তাহলে আমরা পেতাম। নেতাদের কাছে দিয়েছে বলে আমরা পাচ্ছি না। পুলিশের হাতে দিলেও আমরা পাইতাম। র‌্যাব বা পুলিশ, সেনাবাহিনীর হাতে যদি দেয় তাহলে আমরা পাব।’

Advertisement

কমলাপুরের পাশের বস্তির অধিবাসী জাকির হোসেন ও তার স্ত্রী বলেন, ‘সেখানে ২২টা পরিবার আছি। অনেকের ছেলে নাই, কারও স্বামী নাই। আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। আমরা সাহায্য চাইলে কেউ ফিরেও তাকায় না।’

এসময় দুজন নারী তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে বলেন, ‘আমরা ফকিরাপুলের ভোটার। সব সময় তাগো ভোট দেই। কিন্তু তাও আমাদের সাহায্য দেয় না।’

এইচএস/এইচএ/পিআর