ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর অভাবে ময়লা ফেলার পলিথিনের ব্যাগ পরে করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়া ব্রিটেনের তিনজন নার্স করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মাত্র এক সপ্তাহ আগে তারা পলিথিনের ব্যাগ পরে রোগীদের সেবা দেয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে ভাইরাল হয়েছিলেন।
Advertisement
সেই সময় তারা লন্ডনের হ্যারো অঞ্চলের নর্থউইক পার্ক হাসপাতালে করোনা রোগীদের সেবা দেয়ার জন্য যথাযথ মাস্ক, গাউন ও গ্লোভসের ঘাটতির কথা জানান।
হাসপাতালটির আইসিইউ শয্যা রোগীতে পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এই হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডের ৫০ শতাংশের বেশি কর্মীর শরীরে চলতি সপ্তাহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে বলে ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি টেলিগ্রাফ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
ওই তিন নার্স টেলিগ্রাফকে জানিয়েছেন, হাসপাতালে পিপিইর ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেয়ায় তারা ময়লা ফেলার পলিথিনের ব্যাগ পরে করোনা রোগীদের সেবা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এছাড়া তাদের কাছে আর কোনো বিকল্প উপায় ছিল না।
Advertisement
তারা বলেন, হাসপাতালে পিপিই নেই। আমাদের সহকর্মীরা যথাযথ পিপিই ছাড়া সেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এটা আমরা জানতাম। পিপিই আমাদের জন্য খুবই দরকার। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না। সে কারণে পলিথিন পরেই রোগীদের সেবা দিতে হয়েছে।
নর্থউইক পার্ক হাসপাতালের এক নার্স বলেন, এখানে করোনায় আক্রান্ত অনেক তরুণ-তরুণী ভ্যান্টিলেশনে আছেন। তাদের অনেকের অ্যাজমা অথবা ডায়াবেটিস আছে। তারা কাশি থামাতে পারছে না। প্রতিনিয়ত কাশি দিচ্ছে। তাদেরকে সহায়তা করারও কোনো উপায় নেই। তবে আমরা তাদের ভ্যান্টিলেশনে নিয়ে তাদের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সামান্য সহায়তা করতে পারি।
‘এক সময় তাদের শরীর আর পেরে ওঠে না এবং মারা যান। আমরা তাদের বাঁচাতে পারি না। তবে সবচেয়ে খারাপ লাগার বিষয় হচ্ছে, মৃত্যুর সময় আমরা তাদের স্বজনদেরও শেষ বিদায়টুকু জানাতে কাছে আসতেও দিতে পারি না।’
করোনা রোগীদের সেবা দেয়ার সময় নার্সরা সবসময় সাহসের হাসি ধরে রাখেন। কিন্তু ভেতরে ভেতরে তারা ভয়াবহ ভীতির মধ্যে থাকেন। পরিবারের সদস্যদের মাঝে করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে; এমন আশঙ্কায় নার্সদের অনেকেই হাসপাতাল থেকে বাসায় যান না।
Advertisement
ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেছেন, করোনাভাইরাসের কারণে দেশের ৫ দশমিক ৭ শতাংশ চিকিৎসক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কিন্তু ব্রিটেনের রয়্যাল কলেজ অব ফিজিশিয়ানসের (আরসিপি) একটি জরিপ বলছে, দেশটিতে এই মুহূর্তে করোনায় আক্রান্ত চিকিৎসকের সংখ্যা ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
সূত্র : দ্য টেলিগ্রাফ, মেট্রো।
এসআইএস/এমএস