দেশজুড়ে

লকডাউনে পড়েছে ৩৪ রোহিঙ্গা ক্যাম্প, বেড়েছে সেনা নজরদারি

বুধবার বিকেল থেকে কক্সবাজার জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত লকডাউনের আওতায় কেউ কক্সবাজারে প্রবেশ ও কক্সবাজার থেকে বাইরে যেতে পারবেন না। এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারিও দেয়া রয়েছে। এতে করে লকডাউনের আওতায় পড়েছে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পও। সে হিসেবেই সকল কার্যক্রম চালানো হবে বলে জানিয়েছেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. মাহবুব আলম তালুকদার।

Advertisement

আর কক্সবাজার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের ঘোষণাকৃত লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে কঠোরভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ।

আরআরআরসি মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, জেলা লকডাউন ঘোষণা মানে জেলার সমগ্র ভৌগোলিক এলাকা আপনা আপনি লকডাউন হয়ে যাওয়া। জেলার মাঝেই রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পড়ায় তাও এর আওতায় পড়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আলাদা লকডাউন ঘোষণার প্রয়োজন নেই। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামাল হোসেন সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে কক্সবাজারকে লকডাউন ঘোষণা দিয়েছেন।

আরআরআরসি আরও বলেন, ৩৪টি রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে করোনাভাইরাসজনিত লকডাউনের সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে চলতে ইতোমধ্যে আরআরআরসি অফিস থেকে সিআইসিসহ সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমণ রোধে শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে আগে থেকেই আন-অফিসিয়ালি অনেকটা লকডাউনের মতোই নিয়ন্ত্রিত ও সীমিত আকারে কার্যক্রম চলছিল। এখনো ক্যাম্প এলাকাতেই প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চালানো হবে।

Advertisement

এদিকে কক্সবাজার প্রবেশ ও কক্সবাজার থেকে বের হওয়া ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সেনাবাহিনী। ইতোমধ্যে কক্সবাজারের প্রধান সব প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। পাশাপাশি সকল উপজেলায় জোরদার করা হয়েছে সেনাটহল। জরুরি সেবাদানকারী যানবাহন ব্যতীত সব ধরনের যানবাহনের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এমন নির্দেশনা বলবৎ থাকবে। আইন অমান্যকারীদের আর্থিক জরিমানা এমনকি প্রয়োজনে গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

একইভাবে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায়। সেনাবাহিনী এবং পুলিশের অতিরিক্ত চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে সীমিত করা হয়েছে সকল ধরনের যান চলাচল। অতি প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা, চিকিৎসা ও ত্রাণ সংক্রান্ত গাড়ি ব্যতীত কোনো ধরনের গাড়ি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রবেশ করতে দেয়া বা বের হতে দেয়া হচ্ছে না।

সেনাবাহিনীর রামু সেনানিবাস সূত্রে জানায়, আরআরআরসির স্টিকার বা লিখিত অনুমোদন ব্যতীত দেশি-বিদেশি এনজিও বা ব্যক্তিবর্গের ক্যাম্পে প্রবেশ-বাহির সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে পুরো জেলায় জরুরি পরিষেবা যেমন- চিকিৎসা, খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ এই নির্দেশনার আওতামুক্ত থাকবে। বেসামরিক প্রশাসন, সশস্ত্রবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করবে।

উল্লেখ্য, কক্সবাজার জেলায় এ পর্যন্ত ৫১৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ছাড়পত্র পেয়েছেন ৪৫২ জন। আর এ পর্যন্ত ৭৬ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে জেলায়। তাদের সবার রেজাল্ট নেগেটিভ এসেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Advertisement

সায়ীদ আলমগীর/বিএ