দেশে এখন পর্যন্ত ২১৮ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রোগী ঢাকায়। আর করোনা রোগীর সংখ্যায় দ্বিতীয় নারায়ণগঞ্জ। সেখানে ৪৬ জন রোগী ধরা পড়ার পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসলেও পালাচ্ছেন অধিবাসীরা।
Advertisement
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সেখানে কাজ করতে আসা শ্রমিকরা রাতের আঁধারে নিজ নিজ গ্রামে পালিয়ে যাচ্ছেন। এরপর সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পুলিশের কাছে খবর যাওয়ার পর নিজ গ্রাম থেকেও পালানোর ঘটনা ঘটছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নারায়ণগঞ্জে কাজের জন্য যায় মানুষ। এর বেশির ভাগই গার্মেন্টস কর্মী। সেখানকার মেয়র আইভী রহমান জানান, ‘নারায়ণগঞ্জে লকডাউন হয়েছে। কিন্তু পাড়া-মহল্লায় মানুষ এখনও হাঁটাহাঁটি করে। সচেতনতার অভাব আছে। নারায়ণগঞ্জ অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। প্রতিটি মহল্লায় প্রচুর মানুষ। তারা যদি না শোনে, তাহলে তো সর্বত্রগামী হয়ে তাদের পক্ষে ভূমিকা রাখা কঠিন হবে।’
ঘটনার ভয়াবহতা আঁচ করতে পেরে মেয়র কারফিউ জারির দাবি করলেও লকডাউন পর্যন্ত সীমাবদ্ধ আছে। আর আইনশঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে নারায়ণগঞ্জের মানুষ।
Advertisement
জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার কাজাইকাটা গ্রমের ওয়াহেদুজ্জামান বিদ্যুৎ জাগো নিউজকে বলেন, বুধবার আমাদের গ্রামে একই পরিবারের ৪ জন ফিরেছেন। রাতে তারা মাইক্রোবাসে করে বাড়িতে আসেন। ফিরেই গ্রামের চৌরাস্তা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাড়ি ঘুরছেন তারা। এর ফলে গ্রামে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। চেয়ারম্যানেকে জানানোর পর তাদের নামে তালিকা চেয়েছেন।
লক্ষ্মীপুরের নজরুল ইসলাম দিপু জানান, নারায়ণঞ্জে মানুষের অযথা যাতায়াতের সুযোগ সুবিধা বন্ধ করার পর চাঁদপুর হয়ে অনেক লোক তাদের জেলায় ফিরছেন।
চাঁদপুরের মেহিদী হাসান বাপ্পি জানান, চাঁদপুরের কচুয়া এলাকার উজানী তুলপাই গ্রামে একজন গত দুই দিন আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে ফিরেছেন। এই খবর প্রকাশ পাওয়ার পর কচুয়ার পুলিশ তার গ্রামে এসে খুঁজে বের করে এবং রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করে। কিন্তু বুধবার ভোর থেকে ওই ছেলে পলাতক। সঙ্গে তার তার দুই ভাইও পলাতক।
কুড়িগ্রাম জেলার রাজীবপুর থানার কর্তিমারী গ্রামের সাব্বির হোসেন বলেন, দুইদিন ধরেই নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে বেশ কয়েকজন আমাদের গ্রামে এসেছে। গ্রামের সহজ-সরল মানুষ না জেনে তাদের সঙ্গে মিশছেন। তারাও সব জায়াগায় যাচ্ছেন।
Advertisement
নারায়ণগঞ্জের অধিবাসী সরকারি এক কর্মকর্তা লিয়াকত হোসেন বলেন, অনেকে চিটাগাং মোড় হয়ে বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছেন।
এদিকে করোনাভাইরাসের ভয়ঙ্কর থাবার কবলে পড়েছে রাজধানী ঢাকা। গত ৮ মার্চ থেকে আজ ৮ এপ্রিল পর্যন্ত এক মাসে দেশে মোট ২১৮ জন করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১২৪ জনই রাজধানী ঢাকার। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্তকৃত ৫৪ জন রোগীর ৩৯ জনই রাজধানীর ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
এইচএস/এমএসএইচ/এমকেএইচ