‘করোনায় মৃত্যু হয়েছে’ আতঙ্কে এক বৃদ্ধের লাশ ঘরে রেখে পালিয়ে গেছেন স্বজনরা। খবর পেয়ে ওই বৃদ্ধের লাশ কাঁধে তুলে নিয়েছেন স্থানীয় এক কাউন্সিলর। পরে গোসল ও জানাজা শেষে ওই বৃদ্ধকে দাফন করেছেন কাউন্সিলর ও তার লোকজন।
Advertisement
করোনা দুর্যোগে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনে এগিয়ে আসা এই কাউন্সিলরের নাম মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।
করোনা কিংবা করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের লাশ দাফনের ঘোষণা দিয়েছিলেন কাউন্সিলর খোরশেদ। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার (০৮ এপ্রিল) দুপুরে মাসদাইর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে ওই বৃদ্ধের দাফন সম্পন্ন করলেন তিনি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ শহরের জামতলা এলাকায় পাঁচদিন ধরে করোনার উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ থাকার পর বুধবার সকালে এক বৃদ্ধ (৭০) মারা যান। করোনায় মৃত্যু হয়েছে আতঙ্কে বৃদ্ধের লাশ রেখে পালিয়ে যান স্বজনরা। বৃদ্ধের ঘরে স্ত্রী ও দুই মেয়ে আছেন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘরের ভেতর খাটে বৃদ্ধের লাশ পড়ে থাকলেও স্বজনদের কেউ দেখতে আসেনি। পরে প্রতিবেশীদের দেয়া খবরে কাউন্সিলর ও তার লোকজন লাশ নিয়ে মাসদাইরের কবরস্থানে দাফন করেন।
Advertisement
এ বিষয়ে কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, পরিবারের দাবি করোনাভাইরাসের সব উপসর্গ নিয়ে গত পাঁচদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন ওই বৃদ্ধ। বুধবার সকালে তিনি মারা যান। মারা যাওয়ার পর করোনা আতঙ্কে পরিবারের কেউ লাশের কাছে যাননি। ভয়ে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করি আমরা। এরপর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় সব নিয়ম মেনে সিটি করপোরেশনের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করি।
তিনি বলেন, জামতলার ওই বৃদ্ধ করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। আমাদের স্বেচ্ছাসেবক আরিফুজ্জামান হীরা, হাফেজ আকরাম ও জুনায়েদকে নিয়ে লাশ সংগ্রহ করি। কবর খনন, গোসল ও জানাজা শেষে তাকে দাফন করি। তবে মৃত বৃদ্ধের নমুনা সংগ্রহ করেনি স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন।
কাউন্সিলর খোরশেদ বলেন, কথা দিয়েছিলাম করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে লাশ দাফন করব। বুধবার থেকে কার্যক্রম শুরু হলো। করোনায় যারাই মারা যাবে তাদের দাফন করব আমরা। কেউ করোনায় মারা গেছে আমাদের জানালেই হবে। লাশ সংগ্রহ, কবর খনন, গোসল ও জানাজা শেষে দাফন করব আমরা।
এর আগে বাজারে যখন হ্যান্ড স্যানিটাইজার সংকট তখন নিজ উদ্যোগে হাজার হাজার হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি করে বিনামূল্যে বিতরণ করেছেন কাউন্সিলর খোরশেদ।
Advertisement
শাহাদাত হোসেন/এএম/এমকেএইচ