কখনো থেমে থেমে আবার কখনো মুষলধারে দিনব্যাপী ঝরছে বৃষ্টি। আর এ বৃষ্টির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে রাজধানীর কর্মজীবী ও শ্রমজীবী মানুষ। গত সোমবার থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। আর বৃষ্টির কারণে রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্থানে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে পুরো রাজধানী জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অসহনীয় যানজট। মঙ্গলবার সকাল থেকেই বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা আর যানজটে স্থবির হয়ে পড়ে রাজধানী। অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে গেছে হাটু কিংবা কোমর পানিতে। জলাবদ্ধতা নিরসনে তিন মাসের সময় চেয়েছিলেন ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন মেয়র। কিন্তু কে শোনের কার কথা আর আহাজারি।ট্রাফিক পুলিশের দাবি, আজকের (মঙ্গলবার) রাজধানীর যানজটের অন্যতম কারণ জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতার কারণে বেশ কিছু ব্যস্ত রুটে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্রধান সড়ক ও এর আশপাশ এলাকার সড়কগুলোর পানি নিষ্কাশন প্রক্রিয়াও এক রকম বন্ধ দেখা গেছে। পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার। ডিএমপি’র ট্রাফিক কর্মকর্তারা বলছেন, পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব পুলিশের নয়। এ ব্যাপারে ট্রাফিকের দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান জানান, রাস্তার যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে পুলিশ। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে রাস্তা কলাপস (বন্ধ) হয়ে গেলে পুলিশেরই বা কি করার আছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে না পারলে যানজট সমস্যা নিরসন হবে না। সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃষ্টিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মহাখালি, বাড্ডা, মালিবাগ, রামপুরা, মগবাজার, মৌচাক, বনশ্রী, শান্তিনগর মোড়, কাকরাইল, বনানী ও বনানী ফ্লাইওভার এলাকার রাস্তা ও অলিতে গলিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। কোথাও হাটু পানি কোথাও বা কোমর পানি। বিকেল হতে হতে জলাবদ্ধতা আর যানজট পরিস্থিতি আরো নাজুক হচ্ছে।শান্তিনগর মোড় এলাকায় অসংখ্য স্কুল ও কলেজ ফেরত শিক্ষার্থীকে নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। শান্তিনগর মোরে প্রভাতী পরিবহনের যাত্রী বলছেন, প্রতিদিন উত্তরা থেকে পল্টন যান তিনি। আজ আসতে পারলেও ফিরতে ব্যাপক যানজটে পড়েছেন। বিকেলে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী কিংবা অফিস থেকে কর্মজীবীরা পড়েছেন মহাবিপাকে। রাস্তায় জলবদ্ধতা ও যান চলাচলে স্থবিরতা থাকায় প্যান্ট গুটিয়ে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে হাঁটতে দেখা গেছে অনেককেই। শান্তি নগর মোড়ে নিয়মিত রিকশা চালান রইছ মিয়া। তিন বলছেন, মামা কনহানে যাইবেন! পানি প্যান ডা গুছান, জুতা ডা হাতে লন। নইলে ভিইজ্জা যাইবেন। শফিকুল ইসলাম নামে শান্তিনগরের অফিস থেকে বাসায় ফেরত এক কর্মজীবী বলছেন, শান্তিনগর আর শান্তিনগর নাই। অশান্তির নগরে পরিণত হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। দেখা দেয় যানজট। এসবের দেখার কেউ নেই। আমাদের কষ্ট বোঝার মতো কেউ নেই। যাচ্ছেতাই চলছে সব কিছু।জেইউ/এসকেডি/পিআর
Advertisement