দেশজুড়ে

১১৬ জনের নমুনা নিয়ে সিলেটে করোনা পরীক্ষার ল্যাব চালু

করোনাভাইরাস পরীক্ষায় ১১৬ জনের নমুনা নিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) মেশিনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়।

Advertisement

সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল বলেন, ইতোমধ্যে চার ঘণ্টায় আমাদের কাছে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করার জন্য প্রচুর নমুনা এসেছে। প্রথমে তিনটি লেভেলের প্রসেস শেষে পিসিআর মেশিনে দেয়ার পর ১৪৫ মিনিট সময় লাগবে এই টেস্ট করতে। সব মিলিয়ে চার ঘণ্টা লাগবে এই টেস্ট সম্পন্ন করতে। এক সঙ্গে ৯৬টি নমুনা পরীক্ষা করা যাবে। চার ঘণ্টা পর পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যাবে। বিকেলের মধ্যে সিলেট বিভাগের চার জেলা থেকে আরও অনেক নমুনা আসবে বলেও তিনি জানান।

সিভিল সার্জন আরও জানান, দুপুরে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে পিসিআর মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা শুরু করা হয়েছে। ধারণক্ষমতা অনুযায়ী প্রথমবারে ৯৪টি ও এরপর থেকে ৯৬টি নমুনা পরীক্ষা করা যাবে। তবে সিলেটে শনাক্তকরণ পরীক্ষা হলেও প্রথম দিকে পরীক্ষার ফলাফল সিলেট থেকে দেয়া হবে না। পরীক্ষার ফল ফলাফল পাঠানো হবে আইইডিসিআরে। তারা প্রতিদিনের ব্রিফিংয়ে এই রিপোর্টগুলো প্রকাশ করবে।

তিনি বলেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আজ সিলেটে করোনাভাইরাস শনাক্তের ল্যাবের জন্য ২০ জোড়া জুতা প্রদান করেছেন। যা আমাদের ল্যাবের জন্য খুবই দরকারি ছিল। এ জন্য মেয়রকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।

Advertisement

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, উনার প্রচেষ্টায় আমরা সিলেটেও করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পেরেছি। আমাদের কাছে এখন ১ হাজারের ওপর কিট মজুত আছে। তবে আমাদের এন-৯৫ মাস্কের কিছুটা সঙ্কট রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন মেনেই বিভিন্ন উপজেলা থেকে নমুনা সংগ্রহ করবেন টেকনোলজিস্টরা।

প্রবাসীবহুল সিলেট অঞ্চল করোনা সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হলেও এখানে করোনাভাইরাস পরীক্ষার সুযোগ ছিল না। এতে ক্ষোভ ছিল এই অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে। এ অবস্থায় গত ১ এপ্রিল সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে পিসিআরসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আনা হয়। মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি ও ভাইরোলজি ল্যাবকে পিসিআর মেশিন স্থাপনের জন্য প্রস্তুত করা হয়।

এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ এবং মাইক্রোবায়োলজি ও ভাইরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. ময়নুল হক জানান, এ মেডিকেলে করোনা ভাইরাস শনাক্তকরনের জন্য ফোকাল পার্সন হিসেবে কাজ করবেন সহকারী অধ্যাপক ডা. প্রেমানন্দ দাস।

তিনি বলেন, পরীক্ষার জন্য ল্যাবে মেডিকেল কলেজের চাররজন অধ্যাপক ও ১০ জন টেকনিশিয়ান প্রতিদিন কাজ করবেন। এই পরীক্ষা করাতে কোনো ফি দেয়া লাগবে না। তবে এই পরীক্ষা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। চিকিৎসকরা যাদের পরীক্ষার প্রয়োজন মনে করবেন এবং সিলেট বিভাগের চারটি জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে যে নমুনাগুলো আসবে সেগুলো এখানে পরীক্ষা করা হবে।

Advertisement

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) গাইড লাইন অনুযায়ী করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইউনুছুর রহমানকে উপদেষ্টা ও ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মঈনুল ইসলামকে সভাপতি, সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ারুল হককে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইউনুছুর রহমান জানান, দেশের অন্য স্থানে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব স্থাপনে যে সময় লেগেছে এর চেয়ে কম সময়ে সিলেটে ল্যাব স্থাপন এবং কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গত ৩০ মার্চ পিসিআর মেশিনটি সিলেট এসে পৌঁছে। এরপর থেকে শুরু হয় ল্যাবের কাজ। এক সপ্তাহের মধ্যে ল্যাব স্থাপনের কাজ শেষে মঙ্গলবার থেকে এটি চালু করা হয়।

ছামির মাহমুদ/আরএআর/পিআর