রাজনীতি

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের মানুষদের বাঁচাতে বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণার আহ্বান

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সোমবার ‘করোনা নাশে মানুষের পাশে’ দলের ঘোষিত দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের মধ্যে খাদ্য বিতরণের এই কর্মসূচিতে ভিডিওর মাধ্যমে যুক্ত হয়েছেন। এসময় তিনি বলেন, এই মুহূর্তে সব থেকে জরুরি প্রয়োজন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে যে মানুষগুলো রয়েছে তাদের কাছে খাদ্য পৌঁছে দেয়া। যদি সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে হয় তাহলে তাদের কাছে খাদ্য পৌঁছে দেয়া ছাড়া এই দুরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হবে না।

Advertisement

ইতোমধ্যে আমরা লক্ষ্য করেছি যে, মানুষ কাজ না পেয়ে তারা বাইরে চলে আসছে খাদ্যের সন্ধানে, এমনকি গার্মেন্টস শ্রমিকরা তাদের চাকরি বাঁচাতে দলে দলে ঢাকায় চলে আসছে। এই ধরনের সিদ্ধান্ত কত অবিবেচক ও কত অমানবিক সেটা আমাদের চোখের সামনে আমরা ঘটতে দেখলাম।

মেনন আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী গতকাল যে পাঁচটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন তাকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি, কিন্তু সে ক্ষেত্রে যে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক যারা ২৭% মানুষ এবং গ্রামীণ যে দরিদ্ররা প্রায় তিন কোটির ওপরে মানুষ তাদের কাছে খাদ্য পৌঁছে দেয়া এবং তাদেরকে সহায়তা করার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি ব্যাপক সংকট সৃষ্টি ঠেকাতে হয় সেক্ষেত্রে একদিকে যেমন জীবন বাঁচাতে হবে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থায় নজর দিতে হবে, ঘরে ঘরে নিজেদের থাকতে হবে তেমনি অন্যদিকে তার জীবিকাও বাঁচাতে হবে, না হলে পরে তার পক্ষে কর্মক্ষম থাকা সম্ভব হবে না।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবার যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তা অত্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ কোনো সন্দেহ নাই, কিন্তু সাধারণ যে লোকগুলো এই কাজের সাথে যুক্ত থাকবে, যারা অর্থনীতির মূল ভূমিকায় রয়েছে তাদেরকে কর্মক্ষম রাখা, তাদেরকে স্বাস্থ্যবান রাখা এটাও কিন্তু অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করবে। প্রধানমন্ত্রী সব ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিয়েছেন কিন্তু কৃষির ক্ষেত্রটি একটু বাদ রয়ে গেছে বলে আমাদের মনে হয়েছে। এই কৃষককে যদি আমরা এই মুহূর্তে প্রণোদনা দিতে না পারি এবং সামনে যে বোরো ফসল আসছে তার দাম সম্পর্কে যদি তারা নিশ্চিন্ত না হয় এবং বোরো ফসল কাটা ও সংরক্ষণের জন্যে তাদের যে পুঁজির প্রয়োজন তা যদি তারা না পায় সেক্ষেত্রে এই সংকট মোকাবেলা করতে তারা পারবে না।

Advertisement

মেনন একই সঙ্গে স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে যে ঘাটতি রয়েছে তা পুরণ করার জন্য বিশেষ প্যাকেজ দেয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন এবং চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্য বীমার জন্য জোর দিয়েছেন। তিনি একই সাথে ওয়ার্কার্স পার্টির এই কর্মসূচিতে যারা অনুদান দিয়েছেন ও সাহায্য করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানান এবং যে সকল কর্মীরা এতে অংশ নিচ্ছেন তাদেরকে প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমাদের নিঃশঙ্ক সাহস নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হবে, নিজেকেও রক্ষা করতে হবে, অন্যকেও রক্ষা করতে হবে।

এদিন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যালয়ের সামনে এই খাদ্য বিতরণ কর্মসূচি শুরু হয়, সেখানে ১০০ মানুষের মাঝে ৫ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি মুসুর ডাল, ১ কেজি পিঁয়াজ, আধা কেজি লবণ, আধা লিটার সয়াবিন তেল ও দু’টি সাবান সম্বলিত একটি করে ব্যাগ বিতরণ করা হয়, আরো ৫০০ ব্যাগ বিতরণের জন্য ঢাকার বিভিন্ন অংশে চলে গেছে।

এরপরে ধারাবাহিকভাবে ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চল যেমন, মুগদা, খিলগাঁও, বৃহত্তরা উত্তরা, পল্লবী, রূপনগর, আদাবর, মোহাম্মদপুর, দারুস সালাম, শের-ই-বাংলা নগর, তেজগাঁও, ভাটার, কোতোয়ালি, সূত্রাপুর, চকবাজার, লালবাগ, গেণ্ডারিয়া, যাত্রাবাড়ী, কদমতলিসহ উত্তর-দক্ষিণ ঢাকা সিটির বিভিন্ন অংশে ক্রমান্বয়ে খাদ্য পৌঁছে দেয়া হবে।

এফএইচএস/এসএইচএস/এমকেএইচ

Advertisement