আন্তর্জাতিক

ক’হাত দূরত্বেই মেয়ে, কোলে নিতে না পেরে চোখ ছলছল পুলিশ বাবার

বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ তাণ্ডব চালাচ্ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। এ ভাইরাসের বিস্তার রোধে অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও ঘোষণা করা হয়েছে লকডাউন। আর এ লকডাউন বাস্তবায়নের গুরু দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশ বাহিনী। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে সড়কসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজ করছে পুলিশ।

Advertisement

করোনার বিস্তার রোধের মানুষের মাঝে সামাজিক দূরত্ব ও বাড়িতে অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিতে নিরলস কাজ করে চলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ সদস্যরা। তবে এত কিছু করার পর এই সমস্ত পুলিশকর্মীদের নিজেদের অবস্থা কেমন? তাদের পারিবারিক ছবিটাই বা কেমন? সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে তারা কি দূরে সরে গেছেন পরিবারের থেকে? পরিবারের কাউকে যাকে এই সংক্রমণ স্পর্শ না করতে পারে তার জন্য কী করছেন তাঁরা? সেই কথা জানাচ্ছেন ভোপালের এক পুলিশ অফিসার। তার বর্তমান পরিস্থিতি জানলে চোখে জল আসবে সবারই।

পুলিশ অফিসার নির্মল কুমার শ্রীবাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবিসহ শেয়ার করেছেন তার দুঃখের কাহিনী। তিনি টুকোগঞ্জ থানার দায়িত্বে আছেন।

পোস্টে শ্রীবাস লিখেছেন, ‘সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়ছি। প্রয়োজনে ৪৮ ঘণ্টাও ডিউটি করতে হচ্ছে। তাতে দুঃখ নেই। কষ্ট হচ্ছে খুব যখন বাড়ি গিয়ে একপাশে বসে খাবার খাই। আর দূর থেকে আমাকে অবাক চোখে দেখে আমার ছোট্ট মেয়ে। ও অবুঝ চোখে আমার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে দেখে। আর হাজার ইচ্ছে সত্ত্বেও ওকে আমি কোলে তুলতে পারি না! ভয় করে, যদি ওর মধ্যে আমার রোগ ছড়িয়ে পড়ে।’

Advertisement

পুলিশ ইন্সপেক্টর নির্মলের পোস্ট করা ছবি ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তিনি বসে খাবার খাচ্ছেন। উল্টোনো বালতিকে টেবিল বানিয়ে তার ওপর থালা রেখে খাচ্ছেন। আর ছোট্ট মেয়ে দূরে দাঁড়িয়ে বাবাকে দেখছে।

পুলিশ কর্মীর এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মনে ব্যাপক দাগ কেটেছে।

উল্লেখ্য, ভারতে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৮৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর এ ভাইরাসে প্রাণ গেছে ৯৯ জনের। চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসে বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত ১৫ লাখ ২৫ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। আর প্রাণ গেছে ৬৬ হাজারের বেশি মানুষের।

এফআর/এমকেএইচ

Advertisement