আন্তর্জাতিক

করোনা মোকাবিলায় সবচেয়ে কঠোর নীতি দক্ষিণ আফ্রিকায়

করোনা ভাইরাস ঠেকাতে দক্ষিণ আফ্রিকায় দেশজুড়ে লকডাউন চলছে এক সপ্তাহ ধরে। আর এর মধ্যেই সরকারের নানা পদক্ষেপ এবং তা কার্যকরের পদ্ধতিতে আশাবাদী হচ্ছেন দেশটির অনেকে।

Advertisement

কারণ এই অল্প সময়েই দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৭ হাজারের বেশি মানুষের পরীক্ষা করেছে এবং ৬৭টি ভ্রাম্যমাণ পরীক্ষা ইউনিট চালু করে কাজে লাগিয়েছে।

গাড়ি চালিয়ে পার হওয়ার সময়ও পরীক্ষা করা হচ্ছে অনেককে। দক্ষিণ আফ্রিকা কিছুদিনের মধ্যেই প্রতিদিন ৩০ হাজার মানুষকে পরীক্ষা করতে পারবে।

দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের, আর আক্রান্ত হয়েছে ১৪০০ জন।

Advertisement

তবে বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় দক্ষিণ আফ্রিকা অপেক্ষাকৃত দ্রুত, কার্যকর এবং অনেকটা নির্দয় ভাবে তাদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছে।

করোনা মোকাবিলায় পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা ভয়ানক একজন নেতা হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন।

নেতা হিসেবে সহানুভূতিশীল, ধীর স্থির চরিত্রের অধিকারী হলেও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও বেসরকারি খাত থেকে সাহায্যের প্রবাহ নিশ্চিত করে পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্রুত সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

প্রেসিডেন্টের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জুয়েলি এমখিজেও তার কর্মচঞ্চল ও পরিস্থিতি বিবেচনায় যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি মার্জিত ও ওয়াকিবহাল দৈনিক সংবাদ সম্মেলনের জন্য বিশ্বব্যাপী নন্দিত হয়েছেন।

Advertisement

নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা লকডাউন বাস্তবায়নে সাধারণ মানুষের সঙ্গে অসম্মানজনক আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অনেক সময় পুলিশ এবং সেনাবাহিনী লকডাউন কঠোরভাবে বাস্তবায়নে জোহানেসবার্গ এবং অন্যান্য এলাকার রাস্তায় সাধারণ মানুষকে পেটানো, অসম্মানজনক আচরণ থেকে শুরু করে গুলিও করছেন। তবে বেশি কঠিন ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে দারিদ্রপীড়িত এবং ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে সামাজিক দূরত্ব ও তাদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা।

তবে সব মিলিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা যে ধরনের লকডাউনের মধ্যে এক সপ্তাহ পার করেছে, সেরকমটা বিশ্বের আর কোনো দেশেই দেখা যায়নি।

এই লকডাউনের মধ্যে ঘরের বাইরে দৌড়ানো বা কোনো ধরনের ব্যায়াম করতে যাওয়া, সিগারেট বা বিয়ার কিনতে যাওয়া, কুকুরকে নিয়ে বের হওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল, যা পৃথিবীর অনেক দেশেই অনুমোদিত ছিল।

দক্ষিণ আফ্রিকার যেই সরকারকে দুর্নীতিগ্রস্ত এবং অকার্যকর হিসেবে সমালোচনা করা হয় এবং তাদের দেশের যেই বেসরকারি খাতকে বিচ্ছিন্ন ও লোভি হিসেবে সমালোচনা করা হয়, তারা যেভাবে এই দুর্যোগ পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে, যে বিষয়টি আসছে আলোচনায়।

এএইচ/পিআর