দেশজুড়ে

এবার ত্রাণ নিয়ে রাতের আঁধারে মধ্যবিত্তের ঘরে ইউএনও

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার একটি গ্রামের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক আব্দুল মমিন (ছদ্মনাম)। স্ত্রী, সন্তানসহ ৩ জনের পরিবার। গ্রাম্য চিকিৎসক হিসেবে প্রতিদিন ৮-১০ জন রোগী দেখে যে টাকা উপার্জন করতেন তা দিয়ে সংসার ভালোমতো চলে যেত। কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার ঠেকাতে সরকারের দেয়া নির্দেশের কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এলাকার কেউ বাড়ির বাইরে যাচ্ছেন না। এ অবস্থায় তার রোগীও একেবারে কমে গেছে। কাছে যে জমানো অর্থ ছিলো তা এক সপ্তাহ আগেই শেষ হয়েছে। এরপর ধার-কর্জ করে ৩ দিন কনোরকম চলেছেন। এরপর স্ত্রী, সন্তানের মুখে খাবার দিতে না পেরে বাড়িতে ডুকরে ডুকরে কাঁদছিলেন। এমতাবস্থায় ওই চিকিৎসকের বাড়ির পাশের একজন বিষয়টি জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মুঠোফোন জানান। শনিবার মধ্যরাতে প্রয়োজনীয় খাবার নিয়ে কর্মহীন হয়ে পড়া গ্রাম্য ওই চিকিৎসকের বাড়িতে হাজির হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম।

Advertisement

করোনা ভাইরাসের কারণে উপার্জন কমে যাওয়া ওই গ্রাম্য চিকিৎসকের মতো উপজেলায় অনেক মধ্যবিত্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে কষ্টে আছেন। অনেকে একেবারে কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে আছেন। কিন্তু অর্থকষ্টে ভুগলেও সামাজিক মান মর্যাদা ও লোকলজ্জার কারণে তাদের অভাবের বিষয়ে কারও কাছে তা প্রকাশ করতে পারছেন না। কারো কাছে সাহায্যও চাইতে পারছেন না। এমন সব মধ্যবিত্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম।

খাবারের অভাবে কেউ যেন অভুক্ত না থাকে তার জন্য তিনি শনিবার রাতভর মধ্যবিত্ত পরিবারের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। পুরো প্রক্রিয়াটিতে গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়েছে যাতে ওই পরিবারের সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন না হয়। এমনকি ত্রাণ দেয়ার সময় ছবিও তুলতে দেয়া হয়নি যাতে তাদের ছবি মিডিয়ায় না আসে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি পর্যায়ে দরিদ্রদের সাহায্য করছেন। এ অবস্থায় মধ্যবিত্ত সব পরিবারের কথা চিন্তা করে তাদের সহযোগিতায় সাহায্যের হাত বাড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে অনুগ্রহ করে আপনারা নিজ বাড়িতে থাকুন। কারও খাবার প্রয়োজন হলে আমরা আপনার বাড়িতে পৌঁছে দেব।

Advertisement

সালাউদ্দীন কাজল/এফএ/পিআর