আন্তর্জাতিক

করোনায় বিপর্যস্ত স্পেনে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা

করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত স্পেন। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে দেশটিতে মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না। জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো শানচেজ বলেছেন, ‘আমরা এখন আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় সংকটের মুখোমুখি।’

Advertisement

করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার মধ্যে আরেক বিপদে পড়েছে দেশটি। টানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে স্পেনের পূর্ব অংশে। দেশটির আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, ২৪ ঘণ্টায় গত ৪ মাসের বৃষ্টি হয়েছে।এর ফলে পূর্ব স্পেনের অধিকাংশ এলাকা এখন বানভাসি।

গত ২৪ ঘণ্টায় স্পেনে নতুন করে আরও ৮০৯ জন কোভিড-১৯ রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শনিবার এই হিসাব দিয়েছে।

স্পেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, শুক্রবার স্পেনে করোনায় মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ৯৩৫ জন থাকলেও শনিবার তা বেড়ে হয়েছে ১১ হাজার ৭৪৪ জন। আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৭৩৬ জনে।

Advertisement

গোটা দেশ এখন করোনা মোকাবিলায় ব্যস্ত। দেশজুড়ে জারি হয়েছে লকডাউন। স্পেনের পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, লকডাউনের সময়সীমা আরও বাড়ানো হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে দেশের পূর্ব অংশে বন্যা পরিস্থিতিতে ব্যস্ত প্রশাসন।

স্পেনের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দেশটিতে চার মাসে যত বৃষ্টি হয়, সেই একই পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ২৪ ঘণ্টায়। কাস্তেলো প্রদেশের রাজধানী কাস্তেলো দে লা প্লানায় প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দেশটির আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বছরের এই সময় সাধারণত ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু ২৪ ঘণ্টায় (৩১ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল) বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৪৭ মিলিমিটার। তারপর থেকে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি তো চলছেই। ফলে পূর্ব স্পেনের মানুষ এখন বানভাসি। টানা বৃষ্টির পলে স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ার উপকূলের অবস্থা ভয়াবহ। ১৯৭৬ সালের পর গত ৩০ বছরে ২৪ ঘণ্টায় এতটা বৃষ্টিপাত আর কোনো বছরে হয়নি। ২৪ ঘণ্টা বা একদিনের হিসেবে গত কয়েক বছরে এটি রেকর্ড বৃষ্টি, যার ফলে স্পেনের আলমাসোরা বুরিয়ানা এবং ভিলাফ্র্যাঙ্কা শহর প্রায় ভাসছে।

এদিকে দেশটির উপর উত্তরাঞ্চলের ডেজার্ট ডি লেস পামেস পর্বতমালা থেকে বৃষ্টির পানি নেমে আসছে। ফলে ভয়াবহ বিপদে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। বাড়িঘর, রাস্তাঘাট সবই প্রায় ডুবতে বসেছে। এলাকায় উদ্ধার কাজে নেমেছে দমকল বাহিনী। বন্যায় আটকে পড়া মানুষদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তারা। এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।

Advertisement

এমএসএইচ