করোনাভাইরাসের জেরে দেশ যখন লকডাউনের পথে হাঁটতে চলেছিল, ঠিক তখনই সিঙ্গাপুরে চলে যান ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। দেশটিতেই থাকেন তার স্বামী সঞ্জয় চক্রবর্তী ও ছেলেমেয়ে অঙ্কন ও ঋষণা। আপাতত দেশটিতে পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটছে অভিনেত্রীর।
Advertisement
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বলেন, পুরোপুরি পরিবারের সঙ্গে সময় কাটছে, ছেলেমেয়ে, স্বামী, সংসার নিয়ে কেটে যাচ্ছে। গাজু (মেয়ে ঋষণাকে এই নামেই ডাকেন) অনলাইনে নাচের ক্লাস করছে। কখনও আমি ওকে বলছি, চল আমিও করি তোর সঙ্গে (হাসি)। আবার কখনও ও হয়ত কিছু বানাচ্ছে, তখনও আমি ওর সঙ্গে থাকছি।
তিনি বলেন, আমার ছেলেরও (অঙ্কন) অনলাইনে ক্লাস চলছে। ও পড়াশোনা করছে। এরপর ওর আমেরিকায় পড়তে যাওয়ার কথা। যদিও এখন যা অবস্থা, তাতে কী হবে জানি না (চিন্তিত হয়ে)! ওর স্কুলে একটা অনুষ্ঠান ছিল ওটা বাতিল হয়ে গেছে লকডাউনের জন্য। তাই ওর মনটা খুব খারাপ। আবার এসবের মাঝেই আমরা বাড়ির মধ্যে বিভিন্ন সময় কাটছে। কখনও আবার কমপ্লেক্সের মধ্যে আমাদের যে সুইমিং পুল আছে সেখানে চলে যাচ্ছি ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়েই।
স্বামী সঞ্জয় চক্রবর্তীর কথা বলতে গিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘সঞ্জয় আবার বলে, আমি থাকলে খাবারগুলো একটু অন্যরকম লাগে। আসলে আমাদের বাড়িতে যিনি রান্না করেন, তিনি খুবই ভালো রান্না করেন। তবুও আমি থাকলে একটু অন্যরকম কিছু করার চেষ্টা করি। এই যেমন সুন্দর করে স্যালাড সাজালাম। আবার আজই যেমন টোফু, গার্লিক, সয়াসস দিয়ে একটা পদ বানালাম’।
Advertisement
‘আমরা যেখানে থাকি সেটা ৩৭ তলা। তাই এখান থেকে গোটা সিঙ্গাপুরের ভিউটা খুব ভালো। সমুদ্রও বেশ ভালো দেখা যায়। সেগুলো উপভোগ করছি। আকাশ দেখছি। এগুলো একটা অন্যরকম পাওয়া। আবার কখনও সিনেমা দেখছি। আমার একটা নৃত্যনাট্য করার কথা রয়েছে, ওটা লিখে ফেলছি এই সময়’।
ঋতুপর্ণা বলেন, আমার তো দুটো সংসার একটা সিঙ্গাপুরে আরেকটা কলকাতায়। আমি এখানে আছি। আবার কলকাতায় আমার শাশুড়িমা, মা রয়েছেন। ওদের জন্যও চিন্তা হচ্ছে। পরিস্থিতি তো ভালো নয়। তাই ওখানেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।
তিনি বলেন, সবকিছুরই একটা পজিটিভ ও নেগেটিভ দিক রয়েছে। এটা যেমন কঠিন একটা সময়, আবার এই পরিস্থিতির জন্যই আমার পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারছি। যেটা আমরা প্রায় করতেই পারতাম না। সকলের জীবনই ভীষণ যান্ত্রিক হয়ে গিয়েছিল। আমরা আবার বেসিকে ফিরে গিয়েছি। খাবার, জল, আর বাসস্থান, এর বেশি আমাদের এখন আর কিছু প্রয়োজন নেই। সকলেরই এক চাহিদা। আসলে একটা কথা বুঝতে হবে। প্রকৃতির আমাদেরকে প্রয়োজন নেই, আমাদের প্রকৃতিকে প্রয়োজন আছে। তাই প্রকৃতির যত্ন নিতে হবে’।
অভিনেত্রী বলেন, তবে একটা চিন্তা হচ্ছে, যে যারা দৈনিক রোজগার করে তাদের জন্য। তাদের কাছে এই পরিস্থিতি খুবই সমস্যার। তাদের জন্য আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। আমি চেষ্টা করছি বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে আমার পক্ষে যতটা সম্ভব সাহায্য করতে। এইভাবে সকলে এগিয়ে এলে কিছু সুরহা হবে বলেই আমার আশা।
Advertisement
এমআরএম/এমকেএইচ