দেশজুড়ে

বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে ফিরল ১১৬ জন, আইসোলেশনে ৫

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভারত সরকার ঘোষিত লকডাউনে কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় আটকে পড়া ১১৬ জন বাংলাদেশি বিশেষ ব্যবস্থায় দু‘দিনে বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন।

Advertisement

শুক্রবার (৩ এপ্রিল) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ও শনিবার (৪ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে তারা ভারতের পেট্রাপোলের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে বাংলাদেশে আসেন।

শুক্রবার ফেরত আসা ৮১ জনের শরীরে উচ্চ তাপমাত্রা বা করোনাভাইরাসের অন্য কোনো লক্ষণ পাওয়া না গেলেও শনিবার সকালে ফেরত আসা ৩৫ জনের মধ্যে পাঁচজনের শরীরে উচ্চ তাপমাত্রা পাওয়ায় তাদের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইশোলেশনে রাখা হয়েছে।

আইসোলেশনে থাকা পাঁচ যাত্রী হলেন- যশোরের স্বপ্না রানী পাল, মাগুরার বনমালী সিকদার, গোপালগঞ্জের সৌরভ মন্ডল, বর্না বিশ্বাস ও খুলনার দিদারুল ইসলাম।

Advertisement

বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে দায়িত্বরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান জানান, শুক্রবার কলকাতা থেকে ফেরা ৮১ বাংলাদেশির ব্যাপারে বিশেষ ব্যবস্থায় এদিন দেশে ফেরা যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ক্ষেত্রে অধিক কড়াকড়ি ও সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। তবে তাদের কারও দেহে উচ্চ তাপমাত্রা বা করোনাভাইরাসের অন্য কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি। এদিন ভারত থেকে আসা যাত্রীদের প্রত্যেককে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। স্বাস্থ্য পরীক্ষাকালে তাদের হাতে বিশেষ সিল দেয়া হয়েছে।

অপর চিকিৎসক ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, শনিবার সকালে ভারত থেকে ৩৫ জন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী দেশে প্রবেশ করেন। এ সময় তাদের মধ্যে পাঁচ যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পাওয়ায় তাদের বাসায় না পাঠিয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবীব জানান, দুদিনে আসা ১১৬ জনের মধ্যে পাঁচজনের শরীরে তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে প্রত্যেকের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর রাখা হয়েছে। তাদের প্রতি নজর রাখার জন্য স্ব-স্ব জেলায় সেগুলো পাঠিয়ে দেয়া হবে।

দু’দেশের দূতাবাস ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলাপ-আলোচনার পর কলকাতায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ‘ঘরবন্দি’ দশা থেকে বের হয়ে দেশে ফেরার অনুমতি দেয় ভারত কর্তৃপক্ষ। সেই হিসেবে ১১৬ জন দু’দিনে দেশে ফিরেছেন। মোদি সরকার ভারতে ‘জনতার কারফিউ’ ঘোষণা করলে গত ১৩ মার্চ থেকে ভারতে প্রবেশ নিষিদ্ধ হয় বাংলাদেশিদের। এরপর ২৬ মার্চ থেকে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে উভয় দেশ থেকে বন্ধ হয়ে যায় যাত্রী পারাপার। এতে ওপারে আটকে থাকা বাংলাদেশিরা পড়েন চরম দুর্ভোগে। এখনো ভারতে আড়াই হাজার বাংলাদেশি বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়ে আছেন। এদের মধ্যে এক হাজার ছাত্র-ছাত্রী।

Advertisement

জামাল হোসেন/আরএআর/এমকেএইচ