জাতীয়

‘ইনকাম নাই তো কী অইছে, গাছগুলানরে বাঁচাইয়া রাখতে অইবো’

করোনাভাইরাস আতঙ্কে ধস নেমেছে নার্সারি ব্যবসায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, হাইকোর্ট, দোয়েল চত্বর ও ঢাকা কলেজসহ রাজধানীজুড়ে ছোটবড় অনেক নার্সারি রয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে গাছ-প্রেমিকরা ফলজ ও বনজসহ নানা জাতের গাছ কিনতে এসব নার্সারিতে ভিড় করতেন।

Advertisement

পাইকারি ও খুচরা দুভাবেই বেচাকেনা হতো। কিন্তু গত ২৬ মার্চ থেকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণার পর ঢাকা ফাঁকা হয়ে গেছে। লাখ লাখ মানুষ ফিরে গেছেন গ্র্রামে। যারা শহরে অবস্থান করছেন তারাও অত্যাবশ্যক প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। ফলে নার্সারি ব্যবসায়ীদের কপাল পুড়েছে। বেচাকেনা শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে।

বেচাকেনা বন্ধ থাকলেও নার্সারিতে থাকা গাছগাছালির যত্ন-আত্তিতে কার্পণ্য করছেন না মালিক-কর্মচারীরা। প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় নিয়ম করে বিভিন্ন জাতের গাছগাছালিতে পানি ছিটাচ্ছেন, ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করছেন ও সার দিচ্ছেন।

সম্প্রতি সাঝ বিকেলে শাহবাগ থানার অদূরে চারুকলা ইনস্টিটিউটের বিপরীত দিকে জনশূন্য রাস্তায় এক তরুণকে একাকী বালতি থেকে পানি নিয়ে নার্সারির বিভিন্ন গাছপালায় ছিটাতে দেখা যায়।

Advertisement

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে ওই তরুণ জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে বেচাকেনা বলতে গেলে একেবারে বন্ধ। আগে যেখানে প্রতিদিন কয়েক হাজার টাকার গাছ বিক্রি হতো, এ সময়ে মাত্র ২৫০ টাকার টাকার গাছ বিক্রি হয়েছে।

বেচাকেনা তো বন্ধ তবুও গাছে নিয়মিত পানি দেয়া ও যত্ন-আত্তি করছেন কেন- এমন প্রশ্ন করতে না করতেই ওই তরুণ বলে ওঠেন, ‘মাইনষের যেমন জীবন আছে, বাঁচনের লাইগ্যা খাওন লাগে তেমনি গাছেরও তো জীবন আছে। আমাগো ইনকাম নাই তো কী অইছে, গাছগুলানরে তো বাঁচাইয়া রাখতে অইবো।’

এ কথা বল আবার তিনি গাছে পানি দেয়ার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

এমইউ/বিএ/পিআর

Advertisement