চিকিৎসা শেষ হলেও দেশে ফিরছেন না বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গত ১ অক্টোবর থেকে কয়েকবার দেশে ফেরার তারিখ পরিবর্তন করছেন তিনি। সর্বশেষ ১৬ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা শোনা গেলেও তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ফলে বিষয়টি নিয়ে শঙ্কা বিরাজ করছে দলটির নেতাকর্মীদের মাঝে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৫ দিন চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থান শেষে গত ১ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা ছিল তার। কিন্তু যথাসময়ে দেশে ফিরে না আসায় দলটির নেতাকর্মীরা উদ্বিগ্ন হওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। গত ৩ ও ৮ অক্টোবর দেশে আসার দুটি তারিখও বাতিল করেছেন তিনি। সর্বশেষ ১৬ অক্টোবর দেশে ফিরছেন এরকম গুঞ্জন শোনা গেলেও ওই তারিখেই দেশে ফিরবেন কি-না তা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৬ অক্টোবরও সিডিউল বাতিল হলে চলতি মাসের ২০ তারিখের মধ্যে দেশে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে খালেদা জিয়ার। ফলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা নিয়ে এরকম বারবার তারিখ পরিবর্তনে রাজনৈতিক মহলে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির এক সমর্থক জানান, চিকিৎসা শেষ হলেও ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) আপাতত দেশে ফিরতে চাচ্ছেন না। আরো কয়েকদিন তিনি পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে চান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি আরো জানান, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেশে ফিরতে চান খালেদা জিয়া। তাই তিনি বিলম্ব করছেন। লন্ডনে আসর পর কয়েকটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিলেও বর্তমানে তিনি পূর্ণ বিশ্রামে রয়েছেন।এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা নিয়ে নানা গুঞ্জনকে ‘অপপ্রচার’ বলছেন দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। তাদের দাবি পূর্ণ সুস্থতা বোধ করলেই যথাসময়েই দেশে ফিরবেন তিনি। জানা গেছে, ১৫ অক্টোবর এমিরেটস এয়ারলাইন্সে তার দেশে ফেরার টিকিট বুকিং দেওয়া আছে। সফরসঙ্গীদের সবার টিকিট পেলে পরদিন ১৬ অক্টোবর দেশে পৌঁছাবেন তিনি। সবার টিকিট ওইদিন না পেলে কয়েকদিন দেরি হতে পারে। তবে ২০ অক্টোবরের মধ্যে তিনি দেশে ফিরছেন-এমনটাই জানিয়েছেন লন্ডনে একটি সূত্র। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, খালেদা জিয়া অবশ্যই দেশে ফিরবেন, খুব দ্রুতই ফিরবেন।দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান জাগো নিউজকে বলেন, দেশের সবচেয়ে দুর্যোগকালে দেশ ছেড়ে যাননি খালেদা জিয়া, এটা প্রমাণিত। তাই দেশে কোনো ঘটনা ঘটল, তাকে দোষারোপ করল সরকার, এ জন্য তিনি দেশে ফিরছেন না। এসব আমি বিশ্বাস করি না, দেশের মানুষও বিশ্বাস করে না।তবে দেশে ফিরতে বিলম্ব করার উৎকণ্ঠায় রয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। খালেদা জিয়া দেশের বাহিরে অবস্থানকালীন সময়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি জিয়াউর রহমানের সমাধি সরিয়ে ফেলার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়া দেশের বাহিরে অবস্থান করায় দলটির নেতাকর্মীদের মাঝে এই উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে।তবে দলটির মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন লন্ডন থাকতে যাননি। চিকিৎসা শেষ হলে তিনি অতি দ্রুত দেশে ফিরে আসবেন।তিনি আরো বলেন, বিএনপির এখন কোনো আন্দোলন কর্মসূচি নেই। দল পুনর্গঠন চলছে। এ কাজগুলো আমরাই করছি। বেগম জিয়ার ওপর কাজের চাপ কম। তাই চিকিৎসার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন তিনি।এমএম/আরএস/এআরএস/এমএস
Advertisement