ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় মহারাষ্ট্র প্রদেশের রাজধানী মুম্বাইয়ে করোনায় আক্রান্ত এক মুসলিম বৃদ্ধের মরদেহ দাফনে স্থানীয় মুসলিম সমাজপতিরা বাধা দিয়েছেন। এ ঘটনার পর ওই এলাকার হিন্দুদের সহায়তায় ৬৫ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধের মরদেহ শ্মশানে পোড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
Advertisement
বুধবার মুম্বাইয়ের মালাদ মালওয়ানি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এনডিটিভি বলছে, মৃত ব্যক্তি মালওয়ানি কালেক্টর কম্পাউন্ডের বাসিন্দা ছিলেন। বুধবার ভোরের দিকে জোগেশ্বরীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
মৃত ব্যক্তির পরিবারের এক সদস্যের অভিযোগ, ওই ব্যক্তির মরদেহ মালাদ মালওয়ানি কবরস্থানে নেয়া হলে সেখানে দাফনে বাধা দেন এই কবরস্থানের ট্রাস্টিরা। করোনাভাইরাসে মারা যাওয়ার কারণে তার দাফনে বাধা দেয়া হয়।
তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন মৃত ব্যক্তিকে ভোর ৪টার দিকে মালওয়ানি কবরস্থানে দাফনের অনুমতি দিলেও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা তাতে রাজি হননি। পুলিশ ও স্থানীয় রাজনীতিকরা ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে দাফনের অনুমতি দেয়ার অনুরোধ জানালেও তাতে সাড়া দেয়া হয়নি।
Advertisement
পরে স্থানীয় কিছু সমাজকর্মীর হস্তেক্ষেপ এবং অনুরোধে পাশের একটি হিন্দু শ্মশানে নিয়ে তাকে পোড়ানো হয়। পরিবারের সদস্যদের অনুমতিতে বুধবার সকাল ১০টার দিকে ওই ব্যক্তিকে শ্মশানে পোড়ানো হয়।
মহরাষ্ট্রের মন্ত্রী ও মালওয়ানির এমএলএ আসলাম শেখ দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কোভিড-১৯ এ মৃত মুসলিমরা যেখানে মারা যাবেন, তার কাছাকাছি স্থানের কবরস্থানে দাফন করতে হবে।
তিনি বলেন, কিন্তু এ ঘটনায় ওই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা কাউকে না জানিয়ে মরদেহ মালাদ মালওয়ানি কবরস্থানে নিয়ে এসেছেন। এমনকি কবরস্থানের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদেরও মরদেহ আনার তথ্য জানানো হয়নি। পরে মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা সেখানে তাকে দাফন করার অনুরোধ করেন।
আসলাম শেখ, সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে যারা এখানে মরদেহ নিয়ে এসেছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মঙ্গলবারও করোনায় মৃত এক মুসলিম ব্যক্তির মরদেহ ওই কবরস্থানে দাফন করা হয় বলে জানান মহারাষ্ট্রের এই মন্ত্রী।
Advertisement
মৃত ব্যক্তির ছেলে বলেন, আমার বাবাকে হাসপাতালে মৃত ঘোষণার পর কেউই সহায়তার জন্য এগিয়ে আসেনি। এমনকি আমি হাসপাতালের বাইরে বাবার মরদেহ নিয়ে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বসেছিলাম।
তিনি বলেন, আমরা তাকে মালাদ মালওয়ানি কবরস্থানে দাফন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা যখন সেখানে পৌঁছাই তখন ট্রাস্টিরা করোনা রোগী হওয়ার কারণে বাবাকে দাফন করতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে পুলিশ ও স্থানীয় অন্যান্যদের সহায়তায় পাশের একটি শ্মশানে পোড়ানো হয়।
এসআইএস/এমকেএইচ