রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে দাঁড়িয়ে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে কেঁদে ফেলেন রাজধানীর পল্টন এলাকায় কর্মরত বেসরকারি একটি ব্যাংকের সিনিয়র নারী অফিসার।
Advertisement
আবেগতাড়িত কণ্ঠে পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যেমন জনগণের সেবা করছেন তেমনি আমরাও গ্রাহককে সেবা দিচ্ছি। গ্রাহকদের সুবিধার্থে সীমিত পর্যায়ে ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা রাখার ব্যাপারে সরকারি প্রজ্ঞাপনের কথা আপনারা কি জানেন না? করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি জেনেও তো সন্তানদের রেখে কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। আর আপনি বলছেন পল্টন দিয়ে হেঁটে যেতে।’
এ সময় ভদ্রমহিলার কান্না শুনে ছুটে আসেন আরেক পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ব্যাংকগুলোকে খোলা রাখতে বলা হয়েছে। আচ্ছা, আপনার অফিস যখন করেন, আমরা দেখি কোনো গাড়িতে আপনাকে পাঠাতে পারি কি-না।
এ কথা শুনে ওই নারী বলে ওঠেন, ‘হেঁটেই যাব, পারলে ব্যাংক বন্ধ করে দেন।’
Advertisement
এ দৃশ্যপট বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার। সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পুলিশের সহকারী কমিশনার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও একাধিক ট্রাফিক সার্জেন্টসহ পুলিশ সদস্যরা রাজপথে চলা প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, পিকআপ ভ্যান ও রিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন আটকে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছিল। এতে করে চরম বিপাকে পড়েন ব্যাংকার ও চিকিৎসকরা। তারা নিজেদের পরিচয় দিলেও পুলিশ কোনো যানবাহনকেই রাস্তা চলাচল করতে দিচ্ছিল না। এ সময় একাধিক ব্যাংকার ও চিকিৎসককে রিকশা থেকে নামিয়ে হেঁটে যেতে বলা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চিকিৎসক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে জরুরি সেবার সাথে জড়িতদেরকেও হেনস্তা করছে। মোহাম্মদপুরের উদ্যান এলাকার বাসিন্দা ওই নারী চিকিৎসক বলেন, তিনি পুরান ঢাকারস্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (মিটফোর্ড হাসপাতাল) চাকরি করেন। আজ সকালে তিনি রিকশা নিয়ে মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যান হাউজিং এলাকা থেকে আসার পথে বার বার পুলিশের বাঁধার মুখে পড়েন। অন্যান্য স্থানে পুলিশ আটকালেও পরিচয় পেয়ে ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু আর এখানে আসার পর পুলিশ রিকশার চাকার পাম্প ছেড়ে দিয়েছে।
এ সময় তিনি বলেন, ‘এখন কি আমি মিটফোর্ডে হেঁটে গিয়ে অফিস করবো বলেন?’ এক পর্য়ায়ে অবশ্য পুলিশ ব্যাংকার ও চিকিৎসকদের কর্মস্থলে রিকশা নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেন।
এমইউ/এমএসএইচ/জেআইএম
Advertisement