জীবনের অধিকাংশ সময় জীবাণু নিয়ে গবেষণা করেই কাটিয়েছেন তিনি। আর সেই জীবাণুর ছোবলেই প্রাণ গেল ভারতীয় বংশোদ্ভূত ৬৪ বছর বয়সী বিজ্ঞানী গীতা রামজির। বুধবার (১ এপ্রিল) দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে করোনাভাইরাসে তার মৃত্যু হয়েছে।
Advertisement
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিষেধক আবিষ্কার এবং এইচআইভি নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা করছিলেন গীতা রামজির। দক্ষিণ আফ্রিকার মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। এক সপ্তাহ আগেই লন্ডন থেকে ফিরেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। কোনো অসুখও ছিল না। এমনকি করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গও দেখা যায়নি।
তারপরও হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তার শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। তবে চিকিৎসার বিশেষ সুযোগ দেননি। আর তাই নিয়েই আক্ষেপ করছেন সাউথ আফ্রিকান মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট গ্লেনডা গ্রে।
এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, প্রফেসর গীতা রামজি করোনাভাইরাস সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছিলেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।
Advertisement
আফ্রিকান নারীদের এইচআইভি সমস্যা দূর করতে ভিন্ন পথে গবেষণার কাজ করে বিশ্বের চিকিৎসা মহলে এক নজির তৈরি করেছিলেন গীতা রামজি। গোটা গবেষণা কাজের অধিকাংশটাই তিনি এইডস বিষয় নিয়ে কাটিয়েছেন। ২০১৮ সালে তার এই নজিরবিহীন কাজের জন্য ইউরোপিয়ান ডেভেলপমেন্ট ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালসে সেরা নারী বিজ্ঞানী হিসেবে পুরস্কার পান তিনি।
পুরস্কার হাতে নিয়ে সে সময় গীতা রামজি বলেছিলেন, এইডস গোটা বিশ্বে যে মহামারির আকার নিচ্ছিল, তা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। এই কাজ করতেই আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম।
প্রবীণ রামজি নামে ভারতীয় বংশোদ্ভুত দক্ষিণ আফ্রিকার এক ফার্মাসিস্টকে বিয়ে করেছিলেন গীতা। গীতা রামজির শেষকৃত্য কীভাবে সম্পন্ন হবে, তা এখনও জানা যায়নি। যেহেতু করোনায় মৃত্যু হলে শেষকৃত্য একেবারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন মেনে করতে হয়, তাই এখনও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন গ্লেনডা গ্রে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৩৮০ জন। আর এতে দেশটিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকায় ২১ দিনের লকডাউন চলছে। তবে অনেকেই এখনও লকডাউন সেভাবে মানছে না বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সাউথ আফ্রিকান মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল।
Advertisement
এমএসএইচ/জেআইএম