বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বানানোর লড়াইয়ে এবার নেমেছে বহুজাতিক তামাক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি)। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, তাদের ভ্যাকসিন এখন প্রি-ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে। যদি সেই পরীক্ষা সফল হয়, তবে সব কিছু ঠিকভাবে চললে জুন নাগাদই তারা সপ্তাহে ১০ থেকে ৩০ লাখ করে ভ্যাকসিন বানাতে পারবে।
Advertisement
করোনাভাইরাসের ওষুধ, প্রতিষেধক ও ভ্যাকসিন আবিষ্কারে বিশ্বের গবেষক-চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টার মধ্যে বিএটিও এই ঘোষণাটি দিলো। বুধবার (১ এপ্রিল) ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম এ খবর দিয়েছে।
ডানহিল, লাকি স্ট্রাইক, কেন্ট, পল মল, কুল, বেনসনসহ অনেক ব্র্যান্ডের কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভ্যাকসিন বানানোর কাজ করছে বিএটির যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অঙ্গ প্রতিষ্ঠান কেন্টাকি বায়ো-প্রসেসিং। তাদের টোব্যাকো প্লান্ট টেকনোলজি ব্যবহার বানানো হচ্ছে ভ্যাকসিনটি। যদি প্রি-ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা উতরে যায় ভ্যাকসিনটি, তবে সরকারি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা পেলে এবং অন্যান্য অংশীদাররা পাশে থাকলে জুন নাগাদই সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ করে ভ্যাকসিন তৈরি করা যাবে।
ভ্যাকসিন বানানোর ক্ষেত্রে গবেষণার বিষয়টি উল্লেখ করে কোম্পানিটি বলছে, তারা করোনাভাইরাসের জেনেটিক সিকোয়েন্সের একটি অংশের ক্লোন করেছে, যার মাধ্যমে অ্যান্টিজেন আবিষ্কারের সম্ভাবনা খুলে গেছে (অ্যান্টিজেন হলো এমন ধরনের পদার্থ যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং অ্যান্টিবডি তৈরি করে)। পরে অ্যান্টিজেনটি পুনঃউৎপাদনের জন্য টোব্যাকো প্লান্টে পাঠানো হয়। এরপর সেখানে এটির পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এখন এটিকে প্রি-ক্লিনিক্যাল টেস্টে পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
এ বিষয়ে বিএটির সায়েন্টিফিক রিসার্চের পরিচালক ড. ডেভিড ও’রেইলি বলেন, ভ্যাকসিন তৈরি অনেক চ্যালেঞ্জিং এবং জটিল কাজ। কিন্তু আমরা আমাদের টোব্যাকো প্লান্ট টেকনোলজি দিয়ে এক যুগান্তকারী সাফল্যের পথে পা বাড়িয়েছি। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা সব অংশীদারদের সঙ্গে একযোগে লড়াই করতে প্রস্তুত।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৯ লাখ ৪ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৪৫ হাজার ৩৩৫ জনের। করোনাভাইরাসে সরকারি হিসাবে বাংলাদেশেও মারা গেছেন ৬ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪ জন।
এ ভাইরাসের ওষুধ ও প্রতিষেধক আবিষ্কারে নির্ঘুম রাত কাটছে যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদের। ওষুধ শিল্পখাতের বাইরের কোম্পানিগুলোও মনোযোগ দিয়েছে এদিকে। সবশেষ এই মিছিলে যোগ দিলো বিএটি।
এইচএ/
Advertisement