করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সঙ্কট মোকাবিলায় সরকারের ত্রাণ সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতিবাজরা আরও দুর্নীতিপরায়ণ হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বুধবার (১ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এ শঙ্কা প্রকাশ করে সংস্থাটি।
Advertisement
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘বাংলাদেশে সুশাসনের ঘাটতি এবং বিশেষ করে প্রশাসন ও আইন প্রয়োগে নিয়োজিত সংস্থার দুর্নীতি-প্রবণতা সর্বজনবিদিত। অন্যদিকে, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সংস্থাসমূহের হাতে বর্ধিত দায়িত্ব ও ক্ষমতার পাশাপাশি বর্ধিত সম্পদ অর্পিত হবে এটাই স্বাভাবিক। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যারা দুর্নীতিপ্রবণ তারা এই দুর্যোগের সময় আরও বেশি অনৈতিকতায় নিমজ্জিত হবেন, এই ঝুঁকি বিবেচনায় সরকারের উচিত হবে করোনা সঙ্কট মোকাবিলায় গৃহীত সব কার্যক্রমের বাস্তবায়নের মূলধারায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণকে শীর্ষ প্রাধান্য দেয়া।’
মাদারীপুরের শিবচর, হবিগঞ্জের বাহুবল এবং ভোলায় সরকারি সহায়তার চাল ও ভোজ্যতেল নিয়ে অনিয়মের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের যে দৃষ্টান্ত সংবাদমাধ্যমে এসেছে তা উল্লেখ করে ড. জামান বলেন, ‘জড়িতরা শাসক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বা অন্যভাবে প্রভাবশালী হওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক ও পুলিশ সদস্য যেভাবে কঠোর অবস্থান নিতে পেরেছেন তাতে আমরা স্বস্তি পেয়েছি। কিন্তু এর ঠিক বিপরীতে অভিযোগ উঠেছে, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ‘দোকান খোলা রাখার’ অভিযোগে ব্যবস্থা নেয়ার নাম করে ক্যাশবাক্স থেকে টাকা নেয়ার সময় হাতে-নাতে ধরা পড়েছেন পুলিশ বাহিনীর সদস্য। আমরা সীতাকুণ্ডের ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন হিসেবেই দেখতে চাই। আশা করতে চাই শিবচর, ভোলা ও বাহুবলের দৃষ্টান্ত প্রশাসনিক ও সেনাসদস্যসহ আইন প্রয়োগে নিয়োজিতদের জন্য মডেল হবে। কোনো ব্যত্যয় হলে সরকার ও প্রশাসন পরিচয়-অবস্থান নির্বিশেষে কঠোরভাবে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেবেন।’
করোনাভাইরাস সংক্রমণের মতো বৈশ্বিক মহামারি ঠেকাতে সরকারের পরিচালিত কার্যক্রমে কোনো অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার যে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, তার কঠোর ও নির্মোহ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। বিবৃতিতে সংস্থাটি বলছে, এ ধরনের সঙ্কট মোকাবিলায় সফল হতে হলে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও কার্যকর দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের কোনো বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিতে তারই প্রতিফলন ঘটেছে।
Advertisement
টিআইবি বলছে, এই ঘোষণার বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব এখন সকল পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাকর্মী-সুবিধাভোগী, প্রশাসন, পুলিশসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হাতে।
জরুরি প্রয়োজনে ত্বরান্বিত করার বাধ্যবাধকতা সত্ত্বেও ক্রয়খাতে জবাবদিহিতা এবং খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহে গতিশীলতা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
পিডি/এফআর/এমএস
Advertisement