প্রবাস

করোনায় যুক্তরাজ্যে মৃত্যুর মিছিলে ১১ বাংলাদেশি

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে লাশের মিছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নাম। গত ৮ মার্চ থেকে আজ পর্যন্ত মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয়েছে ১১ জন বাংলাদেশি। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে।

Advertisement

গত রোববার (২৯ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টার দিকে লন্ডনের এনফিল্ডের একটি হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মো. সোহেল আহমেদ (৫০) নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশি মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছিলেন। তার বাড়ি সিলেটের বড়ইকান্দি গ্রামে।

গত শনিবার দুপুর ২টায় লন্ডনের কিং জর্জ হাসপাতালে মারা যান আনোয়ারা বেগম চৌধুরী (৬৫) নামের এক বৃটিশ বাংলাদেশি। তিনি সিলেটের বালাগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন।

একইদিন আলম আশরাফ আকন্দ (৫০) নামের আরেক বাংলাদেশি মারা যান। তার পরিবার জানায়, গত পাঁচ মাস ধরে তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। দুই সপ্তাহ আগে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। তাকে লন্ডনের ইউসিএল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার বাড়ি জামালপুর জেলায়।

Advertisement

এর আগে শুক্রবার লন্ডন স্থানীয় সময় আনুমানিক বেলা আড়াইটায় ম্যানচেস্টার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাঈদ হোসেন জসিম (৬৫) নামে এক বাংলাদেশি। তার বাড়ি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার মুন্সীর হাটে।

এছাড়া এদিন লন্ডনের স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় মো. মনির উদ্দিন (৬০) নামের এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি শহরটিতে প্রবাসী বালাগঞ্জ ওসমানীনগর এডুকেশন ট্রাস্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। তিনি সিলেটের উমরপুর ইউনিয়নের মান্দারুকা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।

গত বুধবার মারা গেছেন হাজী ফখরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রয়্যাল লন্ডন হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তিনি পূর্ব লন্ডনের ডকল্যান্ডে বসবাস করতেন।

গত মঙ্গলবার সকাল ১০টায় একই হাসপাতালে মারা যান খসরু মিয়া (৪৯) নামের এক ব্যক্তি। তিনি টাওয়ার হ্যামলেটসের হোয়াইটচ্যাপেল রোডে সেইন্সবারির সামনে সবজির ব্যবসা করতেন। জগন্নাথপুর উপজেলার শাহারপাড়া আটঘর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন তিনি।

Advertisement

এর আগে গত ২৩ মার্চ ওই হাসপাতালে মৃত্যু হয় টাওয়ার হ্যামলেটসের স্যাটেল স্ট্রিটের বাসিন্দা হাজী জমশেদ আলীর (৮০)। তিনি বিয়ানীবাজার উপজেলার ছনগ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।

গত ১৬ মার্চ তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে মারা যান যুক্তরাজ্যে সফররত মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ মাহমুদুর রহমান (৭০)। তিনি লন্ডনের গ্রেট অরমন্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

যুক্তরাজ্যে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে মৃত্যুবরণ করেন লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের রেহান উদ্দিন (৬৬)। করোনাভাইরাসের সঙ্গে হাসপাতালে আটদিন যুদ্ধ করার পর গত ১৩ মার্চ পূর্ব লন্ডনের রয়েল লন্ডন হাসপাতালে মারা যান তিনি।

গত ৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী প্রথম ব্যক্তি ছিলেন ম্যানচেস্টারে বসবাসরত ৬০ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি। তিনি পাঁচ থেকে ছয় বছর আগে ইতালি থেকে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন ব্রিটেনে।

এদিকে যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে অক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ৪০৮ জন। সোমবার দেশটিতে মারা গেছেন ১৮০ জন। এর মধ্যে ইংল্যান্ডে ১৫৯ জন, ওয়েলসে ১৪ জন, স্কটল্যান্ডে ছয়জন ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে একজন মারা গেছেন। এছাড়া বৃটেনজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ২২ হাজার ১৪১ জন।

গত দুই দিনের তুলনায় সোমবার মৃতের সংখ্যা কমেছে। এ নিয়ে টানা দুদিন কমলো মৃতের সংখ্যা। এর আগে রোববার মারা গেছেন ২০৯ জন ও শনিবার ২৬০ জন। তবে মৃতের সংখ্যা কমায় স্বস্তি মিলছে না।

বিএ