বাংলা গানের যুবরাজ তিনি। ভক্তরা তাকে এই নামেই সম্মানিত করেন। ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ গান দিয়ে বাংলা গানের ভুবনে ধূমকেতুর মতো তার আগমন। এরপর থেকে বৈচিত্র্যময় গানে সুরের জাদু দেখিয়ে চলেছেন আসিফ আকবর। করোনাভাইরাসের প্রকপে কারণে বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে ঘরবন্দি সময় কাটছে তার।
Advertisement
নিয়মিত করোনাভাইরাস থেকে মানুষকে সচেতন করে চলেছেন তিনি। এরই মধ্যে কনোনা প্রতিরোধে মানুষকে সচেতন করতে গানও গেয়েছেন, এছাড়া নিয়মিত স্ট্যাটাস ও ভিডিও বার্তাও দিচ্ছেন।
ভক্তদের সঙ্গে নিয়মিত নিজের পরিবারের কথাও শেয়ার করেন আসিফ আকববর। সংগীত পরিবার ও সংসার দুটোই গুছিয়ে চলেন। এবার সেইরকমই এক অনুভূতি তুলে ধরলেন গায়ক।
রোববার এক স্ট্যাটাসে আসিফ তুলে ধরেছেন পরিবারের অন্যরকম এক গল্প। যেখানে উঠে এসেছে পারিবারিক শিক্ষার বিষয়। তুলে ধরা হলো সেটি।
Advertisement
আসিফ লিখেছেন, ‘ডেঙ্গু চিকুনগুনিয়া আমাকে সাতদিনের বেশি ঘরে আটকে রাখতে পারেনি। সন্ধ্যার পর কোন দাওয়াত থাকলে খুব অস্বস্তিতে থাকি। আমার ভাইবোনরাও সন্ধ্যার পর কোন ফ্যামিলি গেটটুগেদার রাখেনা আমার যন্ত্রনায়।
আমি সবসময় আমার নিজের একটা বলয়ের মধ্যে থেকেছি। সন্ধ্যার পর কোথাও গেলেও দ্রুত চলে আসার চেষ্টা করি। যারা আমাকে কাছ থেকে চেনেন তারা এই কালচারে অভ্যস্ত। আমাদের রুটিনবিহীন জীবনে রিজিকের দৌড়ঝাঁপে মাঝেমধ্যে খুব পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ি, রাত নয়টা দশটা বেজে যায় বিছানা ছাড়তে। বেগম বাসায় ছেলেদের এলান করে দেয় আজ তোমার বাবা অফিসে ( স্টুডিও) যাবেনা।
রণ রুদ্র হাসে, তারা জানে একটু চাঙ্গা হলেই বেরিয়ে পড়বে বাবা। গতকাল বেগমের মন খুব খারাপ থাকায় আমরা চেষ্টা করছিলাম তাকে চিয়ার-আপ করার জন্য। সবাই লক্ষ্মী ছেলের হয়ে ওর কথামতই চলেছি, মেজাজ খারাপ করার সুযোগই দেইনি। রণ রুদ্র আমার ইশারা বোঝে। মা’কে আর যন্ত্রনা দেয়ার চেষ্টাই করেনা কারণ তারা জানে আমি পরিস্থিতি ঠান্ডা করার জন্য সঠিক পদ্ধতিই অবলম্বন করবো। রণ রুদ্র’র সাথে সারাদিন এটা সেটা নিয়ে বেগমের কাহিনী চলতে থাকে।
আমি শুধু অবজার্ভ করি, প্রয়োজনে মাথা ঢুকাই। আজকালকার পোলাপানের তুলনায় আমরা গার্ডিয়ানরা যে স্লো এটা বেগম বুঝতেই চায়না যতক্ষন না আমি বুঝাই। যখন আমার উপরে ক্ষ্যাপে তখন তিনজনই চুপ হয়ে যাই। আমার আম্মা এসব ব্যাপারে যথেষ্ট টনটনে স্মার্ট ছিলেন, বেগম সেই তুলনায় একটু কম মেজাজি, অভিমানী বেশি। এসব কথা লিখার কারন হচ্ছে পরিবার সম্বন্ধে একটু ধারণা দেয়া। পরিবার হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
Advertisement
এখান থেকে লদ্ধ জ্ঞান নিয়েই দুনিয়ায় চলতে হবে। করোনার কারনে অনেকদিন পর বাসায় আমরা একসাথে ডিনার করলাম। রণ বলেছে যতদিন এই ক্রাইসিস থাকবে, আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে আমরা একসাথেই দিনেরাতে খাবো। ব্যাপারটা আমারো ভাল লেগেছে, আমিও ভবিষ্যতে চেষ্টা করবো পরিবারের সাথেই খাবার খেতে। ছেলেদের সাথে বেগমের লেগে যায়, লিমিট ক্রস করলেই তাদের পুরনো আদেশ মনে করিয়ে দেই।
তোমাদের মায়ের সাথে যা খুশি তর্ক করো, আমার বউয়ের সাথে বেয়াদবি করা যাবের না। এভাবেই আমরা আগলে রাখবো আমাদের পরিবার। অন্যথায় অশিক্ষা কুশিক্ষার সন্তান বাবা মা পরিবারের মর্যাদা বুঝবেনা। যতই দিন যাবে পরিস্থিতি করুন থেকে করুনতর অবস্থায় যেতে থাকবে।এই অভিশপ্ত নাগপাশ থেকে মুক্তি মিলবে না প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।’
এমএবি/জেআইএম