বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের দাপট বেড়েই চলেছে। প্রাণ ঝরছে প্রতিদিন অজস্র। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন বিশ্বের এক লাখ মানুষ। মোট আক্রান্ত এখন ৭ লাখ ২১ হাজারের বেশি। বিশ্বজুড়ে প্রাণহানি হয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার।
Advertisement
এমতাবস্থায় দেশে দেশে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। মানা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। চলছে লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন, হোম কোয়ারেন্টাইন, আইসোলেশনসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত চলাফেরা।
হোম কোয়ারেন্টাইন মানে বাড়িতে নির্দিষ্ট ঘরে অন্যদের থেকে নিজেকে আলাদা করে রাখা। কিন্তু যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়, তাদের বাড়িতে সবার আলাদা ঘর নেই। তারা কী করবেন? ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মেদিনীপুর বিভাগে পুরুলিয়া জেলার বলরামপুরে ভাঙিডি গ্রামের এমন ছিন্নমূল ৭ যুবককে এখন ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তাদের তো হোমই নেই। তাই তারা এখন গাছের ওপর এই কোয়ারেন্টাইন পালন করছেন, যাকে বলা চলে ‘গাছ কোয়ারেন্টাইন’।
তারা আপাতত মাচা বানিয়ে গাছেই বসবাস করছেন।
Advertisement
ভারতীয় গণমাধ্যম এই সময়ের খবরে বলা হয়েছে, কাজের খোঁজে চেন্নাই পাড়ি দিয়েছিলেন ভাঙিডি গ্রামের ওই সাত যুবক। দেশজুড়ে লকডাউন। আর এমনই সময় চেন্নাই থেকে এই কয়েক দিন আগেই নিজেদের গ্রামে ফিরেন তারা। গ্রামের মাটিতে পা রাখার আগেই গিয়েছিলেন জাক্তারের কাছে। ডাক্তার তাদের বাড়িতে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলেন।
West Bengal: Villagers of Vangidi village in Balarampur area of Purulia, who have recently returned from Chennai, have quarantined themselves for 14 days on a tree since they do not have a separate room in their houses for isolation. #COVID19 pic.twitter.com/oHUq0j8RZ8
— ANI (@ANI) March 28, 2020ওই সাত যুবকের একজন বিজয় সিং লায়া। তিনি বলছিলেন, ‘আমরা চেন্নাই থেকে এসেছি। বহরামপুর থেকে ভায়া গাড়ি করে গ্রামে ফিরেছি। আমরা এখানে এখন অনেকটাই স্বস্তিতে আছি। ডাক্তার আমাদের গ্রামের মানুষের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতে বলেছেন। ১৪ দিনের কোয়ারানটিনেও থাকতে বলেছেন। কিন্তু আমাদের বাড়িতে নিজস্ব ঘর বলতে কিছুই নেই। গ্রামবাসীরা সবাই মিলে ঠিক করেছেন যে, আমরা যেন গাছেই থাকি।’
‘এই গাছে থেকেই আমরা সব নিয়ম মেনে চলছি। সকালে এখানেই আমাদের খাবার চলে আসে। খাবারের সঙ্গে সঙ্গে পানিও পৌঁছে যায়। এমনকি রান্না করা, পানি গরম করার জন্য একটি স্টোভও আমাদের এখানে আছে।’
Advertisement
জেডএ/পিআর