দেশজুড়ে

সরকারি নির্দেশনা মেনেছেন দিনমজুর, ভেঙেছেন প্রশাসন-জনপ্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় করোনা থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা মানছেন না খোদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা। অথচ একই স্থানে জমায়েত হওয়া শ্রমজীবী মানুষ নির্দেশনামতে দূরত্বে অবস্থান করছেন। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

Advertisement

করোনা প্রতিরোধে নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ বন্ধ রেখে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা শ্রমজীবী, দিনমজুরদের জন্য চালের বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। লক্ষ্মীপুরের চারটি পৌরসভা ও ৫৮টি ইউনিয়নের জন্যও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পৌরসভা ও ইউনিয়নপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু এসব বিতরণ করতে গিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা জনসমাগম সৃষ্টি করছেন। এমনই দৃশ্য দেখা গেছে রামগতি উপজেলার বড়খেরি ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে।

রোববার (২৯ মার্চ) দুপুরে বড়খেরী ইউনিয়নে শ্রমজীবীদের মাঝে সরকারি বরাদ্দের চাল ও টাকা বিতরণ করা হয়। এ সময় সামাজিক দূরত্বের জন্য গোলবৃত্তে শ্রমজীবীদের দাঁড় করানো হয়। উপস্থিত সাধারণ লোকজন নির্দেশনা মেনেই শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে অবস্থান নেন।

কিন্তু প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগের নেতারা দূরত্ব বজায় রাখেননি। তারা একজন আরেকজনের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়েছেন। এ সময় উপস্থিত এক ব্যক্তি মুচকি হেসে বলেন, নিয়ম শুধু দিনমজুরদের জন্য, প্রশাসন আর নেতাদের জন্য নিয়ম বলে কিছু নেই।

Advertisement

চাল বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল মোমিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুচিত্র রঞ্জন দাস, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রিয়াদ হোসেন, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম পাঠান, সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন ও বড়খেরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসান মাকসুদ মিজানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও গ্রাম পুলিশ।

এ সময় সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এর মধ্যে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের হাতে গ্লাভস থাকলেও অন্যদের হাতে ছিল না। তবে সবাই মাস্ক ব্যবহার করেছেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, রামগতি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়নের জন্য নয় টন চাল ও ১০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেল দিনমজুরদের জন্য এক লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবদুল মোমিন বলেন, করোনা প্রতিরোধে মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস বাধ্যতামূলক। কিন্তু দিনমজুররা তা পরে আসেনি। এজন্য তাদের সামাজিক দূরত্বে গোলবৃত্তে দাঁড় করানো হয়েছে। তবে আমাদের আশপাশের সবার মুখে মাস্ক ছিল। সবার হ্যান্ড গ্লাভসের দিকে লক্ষ্য করিনি। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সেজন্য সতর্ক থাকব সবাই।

Advertisement

কাজল কায়েস/এএম/এমএস