করোনা দুঃসময়ে নোয়াখালীর গরিব-দুঃখী মানুষের মাঝে নিজের তহবিল থেকে ৫০ লাখ টাকা বিলিয়ে দিয়েছেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী।
Advertisement
গতকাল শনিবার (২৮ মার্চ) ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় এ তথ্য জানান তিনি। এসব টাকায় খাদ্যসামগ্রী কিনে রোববার (২৯ মার্চ) নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলার গরিব মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, সবাই চাইলে নোয়াখালীর অসহায় মানুষদের জন্য গড়ে তোলা হবে নোয়াখালী ফাউন্ডেশন। সেই ফাউন্ডেশনে ৫০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছি আমি। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে নোয়াখালীর নিরীহ মানুষের জন্য নোয়াখালী ফাউন্ডেশন গঠন করা হবে। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের অন্নবস্ত্রের ব্যবস্থা করা হবে।
সবাইকে এই ফাউন্ডেশনে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা এই ফাউন্ডেশনে যোগ দিন। যোগদান না করলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অসহায় মানুষদের সাহায্য করুন। আমি আমার তহবিল থেকে এই ফাউন্ডেশনের জন্য ৫০ লাখ টাকা অনুদান দিলাম। এসব টাকা গরিব-দুঃখী মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেয়া হয়েছে।
Advertisement
সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, আপনারা কোনো চিন্তা করবেন না। ইতোমধ্যে সব উপজেলা সদরে সরকারি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে গেছে। আমরাও প্রস্তুত আছি আপনাদের সহযোগিতা করার জন্য। যারা খুব বেশি বেকায়দায় বা অসুবিধায় পড়বেন তারা সরাসরি আমার মোবাইল নম্বরে ফোন করবেন। আপনার খাবার আপনার বাড়িতে পৌঁছে দেব আমি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল করিম চৌধুরী জেলার অন্যান্য সংসদ সদস্যদের সাধ্যমতো গরিব মানুষকে সহযোগিতার আহ্বান জানান। প্রবাসে অবস্থানরত ব্যক্তি এবং প্রতিবেশীরা নিজের প্রতিবেশী লোকজনের খোঁজখবর রাখার অনুরোধ জানান তিনি। আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক হওয়ার পাশাপাশি সহযোগিতার হাত বাড়ানোরও অনুরোধ জানিয়েছেন এমপি একরামুল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে একরামুল করিম চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ইতোমধ্যে আমি ৫০ লাখ টাকা দিয়েছি। পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের জন্য ১৭ লাখ টাকা দিয়েছি। সেই টাকা দিয়ে পাঁচ হাজার প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী তৈরি করেছেন নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসব খাদ্য সহায়তা রোববার সকাল থেকে বিতরণ শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, সদর উপজেলায় ১২ লাখ, সুবর্ণচর উপজেলায় ১১ লাখ এবং কবিরহাট-কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার জন্য ১০ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছি। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এসব টাকা দিয়ে সরকারিভাবে বরাদ্দ চালের সঙ্গে ডাল, তেল, আলুসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র কিনে দেবে। কারণ একজন মানুষ তো আর চাল রান্না করে শুধু ভাত খাবে না। এর সঙ্গে আনুষঙ্গিক দরকার। সেটি বিবেচনা করে এসব টাকা ভাগ করে দিয়েছি।
Advertisement
একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন দুর্যোগ ও দুঃসময়ে অসহায় মানুষের পাশে ছিলাম। গৃহহীনদের ঘরসহ বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছি। করোনা দুঃসময়ে সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে নোয়াখালীর অসহায় খেটে খাওয়া মানুষের অন্তত এক সপ্তাহ কষ্ট হবে না। কাজেই সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানাই আমি।
এদিকে সোনাইমুড়ী উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়ন ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিভিন্ন খাবার সামগ্রী দিয়ে এক হাজার প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে অসহায় দুস্থ মানুষের মাঝে এগুলো বিতরণের কথা জানিয়েছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাক মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া।
মিজানুর রহমান/এএম/এমএস