করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু গ্রাহকের লেনদেনের সুবিধার্থে সাধারণ ছুটির সময় সীমিত আকারে দুই ঘণ্টা চলে ব্যাংক লেনদেন। তবে এ সময় গ্রাহক উপস্থিতি ছিল খুবই কম। বেশি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেই ব্যাংকে আসনেনি। আবার যারা এসেছেন তাদের বেশির ভাগই টাকা উত্তোলন করতে এসেছেন।
Advertisement
রোববার ব্যাংক লেনদেন চলাকালে রাজধানীর ব্যাংকপাড়া মতিঝিল, দৈনিক বাংলা মোড়, পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত গ্রাহক লেনদেন হয়। ব্যাংক খোলা ছিল দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। এ সময় বেশিরভাগ ব্যাংকের গ্রাহক উপস্থিতি সাধারণ দিনের তুলনায় অনেক কম ছিল। যারা ব্যাংকে এসেছেন ব্যবসায়িক ও জরুরি প্রয়োজনে এসেছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই টাকা উত্তোলন করেছেন।
এছাড়া প্রতিটি ব্যাংকের দরজায়ই দেখা গেছে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধমূলক প্রাথমিক প্রস্তুতি। শাখাতেই প্রবেশের আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মীরা। ব্যাংকাররা সবাই মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস পরে অফিস করছেন। অনেককে পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম) বিশেষ পোশাক পরে কাজ করতে দেখা গেছে।
Advertisement
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতিঝিল সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসের জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ মোদাস্সের হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী দুই ঘণ্টা ব্যাংকের লেনদেন হয়। করোনাভাইরাসের কারণে গ্রাহক উপস্থিতি খুব কম ছিল। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকের লেনদেনও কম হয়েছে।
তিনি বলে, দুই ঘণ্টায় শাখায় মাত্র ৯৩ জন গ্রাহক লেনদেন করেছেন। টাকার অংকে যার পরিমাণ মাত্র ৭৮ লাখ ৯ হাজার। এর মধ্যে ২৭ লাখ টাকা জমা করেছে বাকি সব উত্তোলন।
স্বাভাবিক দিনের তুলনায় এটি খুবই সামান্য উল্লেখ করে ব্যাংকটির এ শাখা ম্যানেজার বলেন, স্বাভাবিক সময়ে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার গ্রাহক ৩০ থেকে ৩৫ কোটি টাকা লেনদেন করেন।
বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের মতিঝিল শাখার ম্যানেজার মোহাম্মদ মফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, শাখায় গ্রাহকদের উপস্থিতি একেবারে কম। যারা আসছেন তাদের বেশিরভাগ টাকা উঠাচ্ছেন। শিফট ভাগ করে কর্মীরা অফিস করছেন। আজ ৩০ শতাংশ উপস্থিত রয়েছে। এছাড়া সারাদেশে ব্যাংকটির ২৭টি শাখা খোলা রয়েছে।
Advertisement
এদিকে সোনালী ব্যাংকে আসা আরিফ নামের এক গ্রাহক বলেন, একটি ব্যবসায়িক অর্ডার ছিল। নগদ টাকা দিতে হবে। তাই ব্যাংকে টাকা তুলতে এসেছি। ভিড় কম। অন্য সময় যেখানে আধা ঘণ্টা লাগে আজকে দুই মিনিটেই কাজ শেষ হলো।
জানা গেছে, ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। তবে এর মধ্য ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি। এর আগে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের ও পরে ২৭ ও ২৮ মার্চের সাপ্তাহিক ছুটিও যোগ হবে। এছাড়া ৩ ও ৪ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি এ ছুটির সঙ্গে যোগ হবে।
তাই গ্রাহকের লেনদেনের সুবিধার্থে রোববার (২৯ মার্চ) থেকে বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) পর্যন্ত সাধারণ ছুটি সময় পাঁচ দিন সীমিত আকারে ব্যাংক খোলা থাকবে। গত ২৪ মার্চ (মঙ্গলবার) এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শুধু নগদ জমা ও উত্তোলনের জন্য অনলাইন সুবিধা থাকা ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের লেনদেনের সার্বিক সুবিধা নিশ্চিত করে শাখাগুলোর মধ্যে দূরত্ব বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয়সংখ্যক শাখা খোলা রাখা যাবে। অনলাইন সুবিধা ছাড়া ব্যাংকের শাখাগুলো শুধু নগদ জমা ও উত্তোলনের জন্য খোলা রাখা যাবে।
জরুরি বৈদেশিক লেনদেনের জন্য এডি শাখাগুলো খোলা রাখা যাবে। এটিএম ও কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন চালু রাখার সুবিধার্থে এটিএম বুথগুলোয় পর্যাপ্ত নোট সরবরাহ রাখতে হবে এবং সার্বক্ষণিক চালু রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
এসআই/বিএ/এমএস