মা, শাশুড়ি, স্বামী, দুই মেয়ে- এই নিয়ে সুমির সংসার। থাকেন রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে। কিন্তু এই ছয় সদস্যের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম সুমি। তার স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন। সংসারের হাল ধরতে ১০ বছর আগে রিকশা চালানো শুরু করেন সুমি। এরপর রিকশা ছেড়ে ছয় মাস ধরে অটোরিকশা চালাচ্ছেন তিনি।
Advertisement
করোনাভাইরাস থেকে রেহাই পেতে সরকার সবাইকে ঘরে থাকতে বলেছেন। সরকারি নির্দেশনা ও নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সুমিও কয়েক দিন বাসা থেকে বের হননি। এতেই তার জমানো যা কিছু অর্থকড়ি ছিল সব শেষ। এখন আর সংসার কিছুতেই চলছে না। তাই রোববার (২৯ মার্চ) অটোরিকশা নিয়ে বেরিয়েছেন তিনি। তার সঙ্গে দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। খালি অটোরিকশা নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
সুমি জাগো নিউজকে বলেন, ‘গাড়ি চালাই প্রায় ১০ বছর। প্রথমে শুরু করি প্যাডেল রিকশা দিয়ে। অটোরিকশা চালাই প্রায় ছয় মাস ধরে। অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছি। এই করোনার কারণে গত কয়েক দিন বাসায় ছিলাম। কিন্তু পেট তো আর এইডা মানতেছে না। আজকে বের হইছি, কারণ হাতে টাকা নাই।’
তিনি বলেন, ‘কী করুম?’ পরিবারে মা, শাশুড়ি, স্বামী আর দুইটা মেয়ে আছে। আমার স্বামীর মাথায় একটু সমস্যা। আমাদের পরিবারে আমি একাই উপার্জন করি।’
Advertisement
গত ২৬ মার্চ থেকে চলছে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি। বন্ধ রয়েছে গণপরিবহনও। ২৬ মার্চ থেকে ঢাকার রাস্তা ফাঁকা। তবে গত তিন দিন রাস্তায় মানুষ এবং গাড়ির সংখ্যা খুব কম থাকলেও তা কিছুটা বেড়েছে রোববার। এদিন অনেক কর্মজীবী মানুষ বেরিয়েছেন জীবিকার সন্ধানে। রাস্তায় রিকশার সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মতো। পেটের দায়ে দুর্যোগের মধ্যে রিকশা নিয়ে বের হলেও মানুষ কম থাকায় সুমির মতোই অধিকাংশ রিকশা চালককে ভাড়ার সন্ধানে ঘুরে বেড়াতে অথবা অলসভাবে গাছের ছায়ায় বসে থাকতে দেখা গেছে। পিডি/ এমএফ/এমএস