রাজধানীর সড়কগুলোতে গত ক’দিনের তুলনায় পরিবহন বেড়ে গেছে। করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে ১০ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দিলেও চতুর্থ দিনেই অনেকে নিজ নিজ প্রয়োজনে ব্যক্তিগত পরিবহন নিয়ে বেরিয়ে গেছে। রাস্তায় বেড়ে গেছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল এবং প্যাডেলচালিত রিকশাও। সেসব বাহনে চড়ে গন্তব্যে ছুটছে লোকজন। যদিও বেশিরভাগ লোকের মুখেই মাস্ক দেখা গেছে।
Advertisement
রাজধানীর গাবতলী, কাজীপাড়া, শ্যামলী, আসাদগেট, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য দিনের চাইতে রোববার সরকারি ছুটির চতুর্থ দিনে রাস্তায় ব্যক্তিগত পরিবহনের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। বিশেষ ছুটির মধ্যেও জীবিকা অর্জনের জন্য মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বা পায়ে হেঁটে বেরিয়েছে। তবে করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদে থাকতে কারও কারও মুখে মাস্ক পরা দেখা গেছে। গণপরিবহন না পেয়ে অনেককে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে ছুটতে দেখা যায়।
কয়েকটি পয়েন্টে দেখা গেছে, বাসস্ট্যান্ডে ভাড়ার জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, রিকশা ও প্রাইভেটকার দাঁড়িয়ে রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষ ভাড়ায় এসব পরিবহনে নিজের গন্তব্যে যাচ্ছে।
গাবতলীতে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষারত ইব্রাহিম মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, পেটের দায়ে ঘর থেকে বের হয়েছি। ঘরে বসে থাকলে কেউ খাবার দিয়ে যাবে না, মাস শেষে বাড়ি ভাড়া দিতে হবে। পরিবারের খরচ তো আর বন্ধ থাকছে না, এ কারণে সকাল ৭টায় সিএনজি নিয়ে বের হয়ে ৪০০ টাকা আয় করেছি। রাত পর্যন্ত গাড়ি চালিয়ে যা আয় হয় তা নিয়ে বাড়ি ফিরব।
Advertisement
শ্যামলী বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষমান ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল চালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের ভয় নিয়েই বের হয়েছি। বাড়ি ভাড়া দেয়ার সময় হয়েছে, সংসারে স্ত্রী ও দুই সন্তানের ভরণ-পোষণ করতে হয়। ঘরে বসে থাকলে সবাইকে না খেয়ে থাকতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে সকাল ৮টায় বের হয়েছি। এ পর্যন্ত ৩০০ টাকা আয় হয়েছে, সন্ধ্যা পর্যন্ত আয় করে বাসায় ফিরব।
পাশেই শামীম নামে এক রিকশা চালক জানান, সরকার সব বন্ধ ঘোষণা করলেও প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত রিকশা চালান তিনি। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ টাকা আয় করে বাসায় ফিরছেন। পেটের দায়ে করোনাভাইরাসের ভয় নিয়ে প্রতিদিন ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে তাকে।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে বৈশ্বিক মহামারিতে পরিণত করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে গণপরিবহনও। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের এ ভাইরাসকে ঠেকাতে দেশবাসীকে ছুটির এ সময়ে ঘরে অবস্থানের পরামর্শ দিয়েছে সরকার। সেজন্য রাস্তায় র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি তৎপর সশস্ত্র বাহিনীও।
করোনাভাইরাসে দেশে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ জন। মারা গেছেন ৫ জন।
Advertisement
এমএইচএম/এইচএ/এমএস