জাতীয়

তিন দিন না খাওয়া রমজান আলী

পথে-ঘাটে, আবর্জনা ফেলবার স্থানে পড়ে থাকা দ্রব্য সংগ্রহকারী দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষই হচ্ছে টোকাই। খ্যাতনামা কার্টুনিস্ট রফিকুন্নবী এ টোকাই চরিত্রটি সৃষ্টি করেন। টোকাই চরিত্রের মাধ্যমে তিনি সমাজের সুবিধাবঞ্চিতদের দারিদ্র্য, বঞ্চনা ও নিরাপত্তাহীনতার চিত্র তুলে ধরেছেন।

Advertisement

ঢাকা মহানগরীতে লক্ষাধিক বস্তিবাসী মানবেতর পরিস্থিতিতে জীবনযাপন করে থাকেন। দারিদ্র্যপীড়িত এ সকল পরিবার তাদের শিশুদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করতে কখনোই সক্ষম হয় না। আর এ কারণেই বস্তির শিশুরা বাধ্য হয়ে অপরিণত বয়সে রোজগারে নামতে বাধ্য হয়। ঢাকা শহরের সাধারণ চিত্রের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে এ টোকাইরা।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। বন্ধ করা হয়েছে গণপরিবাহনও। সামাজিক দূরত্ব (আসলে কথাটা হবে শারীরিক দূরত্ব) বজায় রাখতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতে কর্মহীন হয়ে পড়া এসব টোকাইদের জীবনে নেমে এসেছে দুর্বিষহ যন্ত্রণা। দুমুঠো খাবারের আশায় হন্যে হয়ে ঘুরছেন তারা।

Advertisement

এমনি এক টোকাই রমজান আলী। রাজধানীর পল্টন এলাকায় এক মুঠো খাবারের আশায় হাত পাতছেন, হন্যে হয়ে ঘুরছেন। কিন্তু খাবার যেন তার নাগালের বাইরে।

তার সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি বলেন, ‘আজকে এক টাকাও কামাই করতে পারিনি। তিন দিন থেকে না খেয়ে আছি। দোকান-পাট বন্ধ, কামকাজ কিছুই করতে পারি না। না খেয়ে পড়ে থাকি।’

আগে কিছু কাজ করতেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভাঙারি কুড়িয়ে সেগুলো বিক্রি করে চলতে পারতাম। এখন একবারে বেকার। কোনো কিছু করতে পারছি না। এখন পেটের দায়ে কারে মারমু…কারে ধরমু… এটাই তো ঠিক না। খিদায় পেট জ্বলছে, মাথায় টেনশন ভালো লাগছে না।’

পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেক টোকাই তারেক বললেন, ‘শুনি কোথাও কেউ খাবার বিলি করছে। সেটা শুনে দৌড়িয়ে যাই। তবে যেতে যেতে দু-চারজনকে দিয়ে গাড়ি টান দেয়। আমাদের ভাগ্যে আর খাবার জোটে না।’

Advertisement

এমইউএইচ/এসআর/পিআর