ঘরে ঘরে গিয়ে যেভাবে ভোট চাওয়া হয়েছিল, সেভাবেই ক্ষুধার্ত মানুষকে খাবার পৌঁছে দিতে জনপ্রতিনিধিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনার বাস্তবায়ন শুরু করেছে কক্সবাজারের পেকুয়ার উপকূলীয় মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম।
Advertisement
করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট বিপর্যয়ে সমাজের দরিদ্র শ্রেণির খেটে খাওয়া পরিবারকে নিজেই খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এ সহায়তা দেয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন চেয়ারম্যান ওয়াসিম।
শনিবার (২৮ মার্চ) রাত ৮টার দিকে মগনামা ইউনিয়নের সোনালী বাজার আশ্রয়ণ প্রকল্প, মটকাভাঙা আশ্রয়ণ প্রকল্প, কাটাফাঁড়ি ব্রিজ সংলগ্ন আশ্রয়ণ প্রকল্প, বাইন্যাঘোনা আশ্রয়ণ প্রকল্প ও ধারিয়াখালীর সরকারি খাস জমিতে বসবাসকারী হতদরিদ্র এক হাজার পরিবারকে খাদ্য সামগ্রীর একটি করে প্যাকেট দেয়া হয়।
এসব প্যাকেটে দশ কেজি চাল, দুই কেজি আলু, একটি সাবান, এক কেজি পেঁয়াজ, এক কেজি ডাল ও এক লিটার সয়াবিন তেল রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপকারভোগীরা।
Advertisement
স্থানী জানান, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে পুরো দেশের মতো পেকুয়া উপজেলাও অঘোষিত লকডাউন চলছে। খেটে খাওয়া মানুষের কাজকর্ম বন্ধ রয়েছে। সরকারের আদেশ মেনে ঘরে বসে সময় কাটাচ্ছেন তারা। দোকানপাট বন্ধের পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে সড়ক যোগাযোগও।
যার কারণে অসহায় মানুষগুলো পড়েছে চরম আর্থিক সংকটে। এ দুর্যোগে মানবিক সহায়তা দিতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াসিম এগিয়ে এসেছেন হতদরিদ্র মানুষের পাশে। শনিবার রাতে তিনি দুইটি ট্রাকবোঝাই করে নিত্যপণ্য নিয়ে ছুটে গেছেন অসহায় মানুষের দরজায়। আগাম ঘোষণা ছাড়া তিনি এসব খাদ্য সামগ্রী অসহায় পরিবার গুলোকে দিয়ে আসেন। অনেকেই তাতে হতবাক হলেও দুঃসময়ে সময়ে খাদ্য সামগ্রী পেয়ে খুশিও হয়েছেন।
বাইন্যাঘোনা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা রহিমা খাতুন বলেন, আমরা দিনে আনি দিনে খাই। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিরা কাজে যেতে না পেরে গত চারদিন ধরে ঘরে বসে সময় কাটাচ্ছে। এমন দুঃসময়ে চেয়ারম্যান আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী নিয়ে নিজেই আমাদের বাড়িতে চলে এসেছেন। আল্লাহর তাকে এর প্রতিদান দেবেন।
এদিকে, চেয়ারম্যান ওয়াসিমের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা বলেন, এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। দেশের এ ক্রান্তিকালে চেয়ারম্যান ওয়াসিমের মতো সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিৎ।
Advertisement
মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম বলেন, করোনায় থেমে গেছে স্বাভাবিক কার্যক্রম। এতে চরমভাবে স্তমিত সমাজের দরিদ্র শ্রেণির জীবন। তাদের কথা ভেবে প্রধানমন্ত্রীর অনুপ্রেরণামূলক নির্দেশনায় নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সহায়তা নিয়ে দরিদ্রদের পাশে দাঁড়িয়েছি। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সবারই আশেপাশের গরীব অসহায়দের খোঁজ নেয়া উচিৎ।
তার মতে, মানুষ জড়ো হতে না পারে মতো বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি। অসহায় মানুষগুলো আমাকে ভালোবেসে চেয়ারম্যান বানিয়েছে। অসময়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। মগনামাবাসীকে আমি কথা দিচ্ছি, এ ইউনিয়নের কোন মানুষ খাবারের জন্য কষ্ট পাবে না। প্রতিটি পরিবারের খরব আমি নিয়মিত নিচ্ছি। ইতোমধ্যে এক হাজার পরিবারকে সহায়তা দেয়া হয়েছে। আরও চার হাজার পরিবারকে এ সহায়তা দেয়া হবে।
সায়ীদ আলমগীর/এমআরএম