শরীয়তপুরে করোনা আতঙ্কে ঘরে বন্দি ৩ হাজার ৯শ দুস্থ পরিবার পেলেন ত্রাণ সহায়তা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ৩৯ মেট্টিকটন ত্রাণের চালসহ অন্যান্য খাদ্য উপরণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
Advertisement
শনিবার (২৮ মার্চ) বেলা ১১টা থেকে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের। জেলার ৬ উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে এ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
ব্যক্তিগত ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ চলাফেরা বন্ধ করে সাধারণ মানুষকে ঘরে অবস্থান করতে বলেছে জেলা প্রশাসন। তারই প্রেক্ষিতে গত তিনদিন যাবৎ প্রতিদিন খেটে খাওয়া মানুষ ঘরে বন্দি রয়েছেন। ফলে তাদের খাদ্য সংকটের আশঙ্কা দেখা দেয়ায় বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশে দুস্থদের তালিকা করে এ ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়।
এরই অংশ হিসেবে শরীয়তপুর সদর উপজেলায় ৭০০, নড়িয়ায় ৭০০, জাজিরায় ৭০০, ভেদরগঞ্জে ৭০০, ডামুড্যায় ৫৫০ ও গোসাইরহাট উপজেলায় ৫৫০ পরিবারকে এ ত্রাণ কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়। প্রতিটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল, ১ কেজি ডাল, ৫ কেজি আলু, ১ কেজি করে লবণ ও একটি করে সাবান দেয়া হয়।
Advertisement
সংকট চলাকালীন পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ শাখা।
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নড়িয়া ও সখিপুর থানার ২৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় প্রায় সাড়ে ১২ হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দেবেন বলে জানিয়েছেন। আগামীকাল রোববার সকাল ১০টা থেকে এ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করার কথা রয়েছে। সহায়তার মধ্যে থাকবে ৫ কেজি চাল, ২ কেজি আলু ও ১ কেজি ডাল, ১ লিটার সয়াবিন তেল ও ১টি সাবান।
এ বিষয়ে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম টেলিফোনে জানান, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কোনো দুর্যোগে গরিব ও মেহেনতি মানুষের পাশে ছিলেন এবং আছেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে কোনো গরিব না খেয়ে কষ্ট পায় না। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদশ আওয়ামী লীগ করোনা দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে শবিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত জেলায় ৩৪২ জন প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. আব্দুর রশিদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৩ জন হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় এসেছেন ও ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ শেষ করায় ১৭ জনকে অবমুক্ত করা হয়েছে। জেলায় সর্বমোট ৬৪৪ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকাদের মধ্য থেকে ৩০২ জনকে অবমুক্ত করা হয়েছে। তবে আইসোলেশন বা প্রাতিষ্ঠানিক হোম কোয়ারেন্টাইনে কেউ নেই। এখনও পর্যন্ত জেলায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত বা সন্দেহজন কেউ শনাক্ত হয়নি। জেলায় ৩০টি আইসোলেশন শয্যা ও ১৫০টি কোয়ারেন্টাইন শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
Advertisement
এছাড়াও করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জেলার পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতে বিভিন্ন হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট ও জনসমাগমস্থলে জীবাণুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করছেন জেলা পুলিশ, পৌরসভা ও সেনাবাহিনী।
ছগির হোসেন/এমএএস/এমকেএইচ