করোনাভাইরাসে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশে চলছে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি। একই সঙ্গে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন। রাস্তাঘাটে জনসাধারণের চলাচল একবারেই কম। এ অবস্থায় সবথেকে বিপদে পড়েছেন বাস্তুহারা, গৃহহীন ও ভাসমান মানুষ। তাদের উপার্জন এবং খাবার গ্রহণের প্রায় সব উসৎ বন্ধ হয়ে গেছে। এসব অসহায় মানুষের কথা চিন্তা করে রান্না করা খাবার নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাবলিগ জামাতের কিছু সদস্য।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) নারায়ণগঞ্জের দুইটি রেলস্টেশনে ২৫০ জন ভাসমান মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করেছেন তাবলিগের কয়েকজন সদস্য। তারা শহরের চাষাঢ়া ও এক নম্বর কেন্দ্রীয় রেলস্টেশন এলাকায় এসব খাবার বিতরণ করেছেন।
উদ্যোক্তারা জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯ টায় রান্না করা প্রায় ২৫০ প্যাকেট খাবার নিয়ে আমাদের ছয় জনের একটি টিম চলে যাই শহরে চাষাঢ়া রেলস্টশন ও এক নম্বর রেলস্টেশন এলাকায়। সেখানে শুয়ে থাকা ভাসমান লোকদের মধ্যে খাবারগুলো বিতরণ করা হয়। এসময় বেশ কয়েকজন বলছিল, ‘ভাইগো না খাইয়া রইছি। আপনার কি চরমোনাই।’
জবাবে বলেছি, ‘না আমরা তাবলিগ করি। কিন্তু তাবলিগ করি বলে এটা করছি তা নয়। এটাতো প্রত্যেক মুসলমাদের দায়িত্ব।’
Advertisement
তারা আরও জানান, চাষাঢ়া রেলস্টেশন এলাকায় ভাসমান মানুষগুলো খাবার হাতে পেয়েই খেতে শুরু করে। তারা অনেক ক্ষুধার্ত ছিল। তারা কাজ করে যা উপার্জন করতেন তা দিয়ে বিভিন্ন হোটেল থেকে খাবার কিনে খেতেন। হোটেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের খাবার বন্ধ হয়ে গেছে।
উদ্যোক্তারা সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রতিদিন আমরা এই কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যতদিন সাধ্যে কুলায়। তবে অনেকেই আছেন যারা সমাজে বিত্তবান এবং এই সংকটকালে সহযোগিতা করতে চাইছেন কিন্তু করোনার ভয়ে বের হতে পারছেন না। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিয়ে ভাসমানসহ শ্রমজীবী মানুষের ঘরে ঘরে রান্না করা খাবার পৌঁছে দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। বিত্তবানরা আমাদের পাশে দাঁড়াতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনারা চাল, তেল বা অন্য সামগ্রী অথবা আর্থিক অনুদান পাঠাতে পারেন।
উদ্যোক্তাদের মধ্যে রয়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন, মেজবাহউদ্দিন, ওয়াহিদুজ্জামান, আব্দুল আজিজ, সারোয়ার হোসেন, রেজাউল করিম ও সাংবাদিক রোমান চৌধুরী সুমনসহ আরও বেশ কয়েকজন।
সাংবাদিক রোমান চৌধুরী জানান, আমি উদ্যোক্তাদের একজন সদস্য হিসেবে সরেজমিনে কাজ করছি। প্রশাসনের কাছ থেকে মৌখিক অনুমতিও নিয়েছি। প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে কোনো গণজমায়েত যাতে না হয়। বৃহস্পতিবার খাবার বিতরণের সময় আমাদের কাছে ভিড় করতে না দিয়ে তাদের কাছে গিয়ে আমরা খাবার দিয়ে এসেছি। এতে জমায়েত সৃষ্টি হয়নি। কোনো সহায়তা দিতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন ০১৯১৪০৮৩৭৬০।
Advertisement
এমএফ/এমএস