জার্মানির বিখ্যাত রবার্ট বোচ জিএমবিএইচ কোম্পানি করোনাভাইরাস পরীক্ষার নতুন কিট আবিষ্কার করেছে। জার্মান এই কোম্পানি বলছে, নতুন কিটের মাধ্যমে দুদিনে নয়; মাত্র আড়াই ঘণ্টার মধ্যে রোগীর শরীরে করোনার উপস্থিতি আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।
Advertisement
রবার্ট বোচ জিএমবিএইচ কোম্পানির স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ নতুন এই কিট আবিষ্কার করেছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন হাসপাতাল, ল্যাবরেটরি এবং মেডিকেলে তাদের তৈরি এই কিটের পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হয়েছে।
বোচের বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া, ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য ভাইরাল রোগের পাশাপাশি করোনা শনাক্ত করতে সক্ষম এই কিট। আগামী এপ্রিলেই জার্মানিতে এই কিট বাজারজাত করা হবে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি। তবে বিশ্ববাজারে এই কিট পাওয়া যাবে আরও পরে।
এক বিবৃতিতে বোচের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ভল্কমার ডিনার বলেছেন, এই কিট ব্যবহার করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংক্রমিত রোগীদের শনাক্ত করার পর আইসোলেট ক যারাবে। নর্দান আয়ারল্যান্ডের মেডিকেলে সামগ্রী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান র্যানডক্স ল্যাবরেটরিস লিমিটেডের সঙ্গে যৌথভাবে কিটটি তৈরি করেছে রবার্ট বোচ জিএমবিএইচের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ভিভালিটিক।
Advertisement
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর অন্যতম চাবিকাঠি হলো এর সংক্রমণ শনাক্তকরণ। দক্ষিণ কোরিয়া এবং জার্মানিতে করোনাভাইরাসে সংক্রমিতদের দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব হওয়ায় এখন পর্যন্ত এই দেশ দুটিতে মানুষের মৃত্যু হার কম। অন্যদিকে ইতালি এবং যুক্তরাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণ শনাক্তের গতি ধীর হওয়ায় এই দুই দেশে আক্রান্ত এবং মৃত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত ও পরীক্ষার ফল জানতে এখনও বেশ কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে বেশকিছু কোম্পানি দ্রুত করোনা শনাক্তকরণ কিট তৈরি করছে বলে জানিয়েছে। রোচি হোল্ডিং এজি নামের একটি কোম্পানি তাদের কিটের মধ্যে একদিনে চার হাজারের বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষা করতে সক্ষম বলে দাবি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য এবং ওষুধ প্রশাসন কোভিড-১৯ পরীক্ষার কিট তৈরির জন্য এক ডজনের বেশি কোম্পানিকে অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে দেশটির বিখ্যাত কোয়েস্ট ডায়াগনস্টিক করপোরেশন এবং থার্মো ফিশার সায়েন্টিফিক করপোরেশনও রয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হলেও এখন বিশ্বের ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। সংক্রমণ এবং প্রাণহানিতে চীনকেও ছাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি এবং স্পেন।
চীনে এই ভাইরাসে ৮১ হাজার ৩৪০ জন আক্রান্ত হলেও যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫ হাজার ৬১২ জনে। এছাড়া দেশটিতে মারা গেছেন এক হাজার ৩০১ জন।
Advertisement
অন্যদিকে, চীনে মারা গেছেন ৩ হাজার ২৯২ জন। বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৫ লাখ ৪০ হাজার ৮৩২ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া মারা গেছেন ২৪ হাজার ২৯৩ জন। তবে বিশ্বজুড়ে করোনার চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ২৯৭ জন।
সূত্র : ব্লুমবার্গ।
এসআইএস/পিআর