জাতীয়

হাজীর বিরিয়ানির দোকানে বিক্রি হচ্ছে আলু-পেঁয়াজ!

পুরান ঢাকার বিখ্যাত হাজীর বিরিয়ানি দোকানে এখন আলু, পেঁয়াজ, গাজর, লেবু, শসা বিক্রি হচ্ছে। এমন সংবাদ পাঠ করে পাঠকদের একটু অবাকই হওয়ার কথা। গাঁজাখুরি গল্প বলেও গালমন্দ করতে ছাড়বেন না কেউ কেউ।

Advertisement

কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও এ কথা সত্যি যে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গণজমায়েত বন্ধ করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকনের নির্দেশে গত তিনদিন ধরে ৮১ বছরের পুরোনো (১৯৩৯ সালে প্রতিষ্ঠিত) নাজিরাবাজারের হাজীর বিরিয়ানির দোকানে বিরিয়ানি বিক্রি বন্ধ রয়েছে।

সপ্তাহখানেক আগেও দোকানের সামনের বারান্দায় যে স্থানটিতে বিরিয়ানির ডেকচি রাখা হতো, শিল্পীর নিপুণ হাতের ছোঁয়ার মতো বাবুর্চিদের একজন কাঁঠাল পাতা মুড়িয়ে দ্রুত বিরিয়ানি প্যাকেট করতেন, পাশেই যেখানে চেয়ার ও টুল পেতে মালিক ক্রেতার কাছ থেকে বিল নিতেন, সেখানে এখন বিরিয়ানির ডেকচি নেই, নেই সেই চেয়ার ও টুল ।

বিরিয়ানির বদলে বিখ্যাত এ দোকানে এখন বিক্রি হচ্ছে আলু, পেঁয়াজ, গাজর, পটল, টমেটো ও লেবু। তবে মালিক নন, এ দোকানের দুজন কর্মচারী মালিকের অনুমতি নিয়ে এ সব বিক্রি করছেন।

Advertisement

বুহস্পতিবার (২৬ মার্চ) রাতে সরেজমিন পরিদর্শনকালে আনোয়ার নামে এক কর্মচারীকে দোকানের বারান্দায় এসব বিক্রি করতে দেখা যায়। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে আনোয়ার জানান, এ দোকানে ৬০-৭০জন কর্মচারী কাজ করে। দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবাই চলে গেলেও পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকায় তিনি ও লতিফ নামে দুজন কর্মচারী গ্রামে যাননি। বেকার অবস্থায় পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকতে তারা মালিকের অনুমতি নিয়ে দোকানের বারান্দায় আলু ও পেঁয়াজসহ অন্যান্য জিনিসপত্র বিক্রি করছেন।

প্রাথমিকভাবে দুই হাজার টাকা পুঁজিতে শুরু করেন তারা। পরবর্তীতে একজনের কাছ থেকে হাজার পাঁচেক টাকা ধার করে আরও বেশি করে মাল তোলেন।

আনোয়ার জানান, বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে। মালিক এ সুযোগ না দিলে তাদের পরিবার নিয়ে না খেয়ে মরতে হতো।

উল্লেখ্য, নাজিরাবাজারের বিখ্যাত হাজীর বিরিয়ারির দোকানটির এ স্থান ১৯৩৯ সাল থেকে চালু রয়েছে। খাসির মাংস ও সরিষার তেলে রান্না করা এ বিরিয়াির সুনাম রয়েছে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী। এ দোকানে ক্রেতার ভিড় এত বেশি থাকে যে বিরিয়ানি খাওয়ার সুযোগ পেতে একজনের খাওয়ার সময় মাথার ওপরে চেয়ার ধরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়। প্রতি প্লেট বিরিয়ানির দাম ১৮০ টাকা।

Advertisement

এমইউ/এমএসএইচ/বিএ