কুষ্টিয়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সন্দেহে এক সিঙ্গাপুর প্রবাসীর সাত মাস বয়সী শিশুকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে করোনাভাইরাসের আশঙ্কায় সিঙ্গাপুর প্রবাসীর ওই বাড়িটি লকডাউন ঘোষণা করে লাল পতাকা টাঙানো হয়েছে।
Advertisement
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা তাপস কুমার সরকার ওই শিশুটিকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন চৌধুরী জানান, কুষ্টিয়া শহরের কালিশংকরপুর এলাকার সিঙ্গাপুর প্রবাসী তৌহিদুল ইসলাম গত ৯ মার্চ দেশে ফেরেন। স্ত্রী, শ্যালক ও দুই সন্তান নিয়ে তার পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট পরিবার। গত ২৩ মার্চ ওই সিঙ্গাপুর প্রবাসীর পরিবারের সদস্যরা তাদের সাত মাস বয়সী শিশুকে নিয়ে তথ্য গোপন রেখে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ওই সময় শিশুটির শরীরে জ্বর, ঠান্ডা ও কাশি ছিল। ওই দিন পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানায়, তাদের কেউ বিদেশে থেকে আসেননি বা পরিবারের কোনো সদস্য প্রবাসী কারও সংস্পর্শে যাননি।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা তাপস কুমার সরকার জানান, প্রথমে ওই শিশুটিকে শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার শিশুটির অবস্থা অবনতির দিকে যায়। সন্দেহ হলে চিকিৎসকেরা ওই পরিবারের সদস্যদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। এ সময় ওই পরিবারের সদস্যরা স্বীকর করেন শিশুটির বাবা তৌহিদুল ইসলাম একজন সিঙ্গাপুর প্রবাসী। তিনি গত ৯ মার্চ সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আসেন। তিনি পরিবারের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে ছিলেন। আর পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের এখন পর্যন্ত শরীরে জ্বর, সর্দি, কাশির কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি।
Advertisement
এ তথ্য জানার পর পরই বৃহস্পতিবার শিশুটিকে শিশু ওয়ার্ড থেকে সরিয়ে আইসোলেশনে নেয়া হয়। ভর্তির পর চিকিৎসকরা তাকে নিউমোনিয়ার চিকিৎসা দিচ্ছিলেন।
ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, বিষয়টি আইইডিসিআরকে জানানো হয়েছে। তারা এসে নমুনা সংগ্রহ করে রিপোর্ট দেয়ার পর বোঝা যাবে শিশুটি করোনাভাইরাস পজেটিভ কিনা। এদিকে শিশুটির বাবা সিঙ্গাপুর থেকে এসেছেন বিষয়টি অবগত হওয়ার পর কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন তাৎক্ষণিকভাবে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন চৌধুরীকে সিঙ্গাপুর প্রবাসীর ওই বাড়িটি লকডাউন ঘোষণা করার নির্দেশ দেন।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন চৌধুরী জানান, বিষয়টি অবগত হওয়ার সাথে সাথে তৌহিদুল ইসলাম নামের ওই সিঙ্গাপুর প্রবাসীকে তথ্য গোপনের জন্য ভর্ৎসনা করে শহরের কালিশংকরপুর এলাকার একতলা ওই বাড়িটি লকডাউন ঘোষণা করে লাল নিশানা টানিয়ে দেয়া হয়েছে। ওই পরিবারের সকল সদস্যকে কঠোরভাবে হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আল-মামুন সাগর/এমএএস/এমকেএইচ
Advertisement