আন্তর্জাতিক

সেবা দিতে গিয়ে করোনা সংক্রমিত, অন্যদের বাঁচাতে নার্সের আত্মহত্যা

রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার পর সেটি যাতে অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য আত্মহত্যা করেছেন ইতালির এক নার্স। বুধবার দেশটির নার্সিং ফেডারেশনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

Advertisement

এতে বলা হয়েছে, করোনায় ইতালির সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত এলাকা লোম্বার্দি অঞ্চলের একটি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন ডেনিয়েলা ট্রেজি (৩৪) নামের ওই নার্স। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর সময় থেকে তিনি একেবারে সামনে থেকে রোগীদের সেবা দিয়ে আসছিলেন।

ইতালির নার্সদের সংগঠন দ্য ন্যাশনাল ফেডারেশন অব নার্স ডেনিয়েলার আত্মহত্যার তথ্য নিশ্চিত করেছে। মঙ্গলবার রাতে এক বিবৃতিতে ডেনিয়েলার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।

দ্য ন্যাশনাল ফেডারেশন অব নার্স বলছে, করোনার বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আনতে হাসপাতালে প্রচণ্ড চেষ্টা করছিলেন ডেনিয়েলা। এ সময় প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে নিজের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন তিনি। এটা নিয়ে চরম বিষন্নতায় ভুগছিলেন।

Advertisement

দেশটিতে মঙ্গলবারও রেকর্ড ৭৪৩ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশটির সরকার ব্যাপক ব্যবস্থা নিলেও তা কাজে আসছে না। প্রতিনিয়ত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ এবং মৃত্যু।

মিলান থেকে মাত্র ৯ মাইল দূরের মঞ্জা এলাকার স্যান জিরার্দো হাসপাতালের আইসিইউতে কর্মরত ছিলেন ডেনিয়েলা ট্রেজি। করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা যাওয়ার পর তাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। পরে পরীক্ষায় তার শরীরে করোনার উপস্থিতি নিশ্চিত হন চিকিৎসকরা।

নার্সদের ওই সংগঠন বলছে, ভেনিসেও এক সপ্তাহ আগে একই ভাবে একজন নার্স করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন। স্যান জিরার্দো হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার মারিও আলপারোনি বলেন, ডেনিয়েলা গত ১০ মার্চ থেকে বাসায় ছিলেন। তবে তিনি চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ছিলেন না।

স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, ওই নার্সের প্রাণহানির ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে বিচার বিভাগ। মঙ্গলবার দেশটির স্বাস্থ্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এক পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, দেশটিতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে অন্তত ৫ হাজার ৭৬০ স্বাস্থ্যকর্মী সংক্রমিত হয়েছেন।

Advertisement

মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৯ হাজার ১৭৬ জন। স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমিত সংখ্যা মোট আক্রান্তের প্রায় ৮ শতাংশ।

এসআইএস/এমকেএইচ