প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের আঘাতে বিপর্যস্ত সারাবিশ্ব। প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এ মহামারী ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত মানুষের সংখ্যা। এরই মধ্যে বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৩৯ আর মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচে।
Advertisement
এছাড়া সারাবিশ্বে এখনও পর্যন্ত প্রায় চার লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে মরনঘাতী ভাইরাসে, প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ১৯ হাজার মানুষ। যা প্রতিদিন শুধু বেড়েই চলেছে। এমতাবস্থায় করোনার বিপক্ষে লড়াইয়ের জন্য বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের তারকা খেলোয়াড়রা এগিয়ে আসছেন সাহায্য নিয়ে।
এরই মধ্যে বড় অঙ্কের আর্থিক অনুদান দিয়েছেন লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। এছাড়া নিজেদের সাধ্যমতো নানান সব উদ্যোগ নিচ্ছেন শেন ওয়ার্ন, রবি বোপারারা। পিছিয়ে রইলো না বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররাও।
করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় এবার এগিয়ে এলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা। নিজেদের এক মাসের বেতনের অর্ধেক দান করে দিচ্ছেন মুশফিকুর রহীম, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা।
Advertisement
সবমিলিয়ে মোট ২৭ জন খেলোয়াড়, তাদের একমাসের বেতনের অর্ধেক টাকা দান করছেন। দানকৃত এ অঙ্কের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩১ লাখ টাকা। তবে করবাবদ বাদ পড়বে ৫ লাখ টাকা। ফলে ২৬ লাখ টাকা ব্যবহার করা যাবে করোনা ইস্যুতে।
আজ (বুধবার) বেলার ১২টার খানিক আগে জাগোনিউজকে এ তথ্য জানিয়েছে ক্রিকেট বোর্ডের একটি সুত্র। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ বিষয়টি জানিয়ে এক বিষদ বার্তা দিয়েছেন জাতীয় দলের উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহীম। যেখানে তিনি সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসার।
মুশফিক তার পোস্টে লিখেছেন, ‘আসসালামুআলাইকুম। আপনারা সবাই জানেন করোনাভাইরাসের সংক্রমণে চারদিকে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯ রোগ। এই রোগ প্রতিরোধে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে যার যার জায়গা থেকে।
সেটির অংশ হিসেবে আমরা ক্রিকেটাররা একটা উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি, যেটি হয়তো অনুপ্রাণিত করতে পারে আপনাদেরও। আমরা এই মাসের বেতনের ৫০ শতাংশ দিয়ে একটা তহবিল গঠন করেছি। এই তহবিল ব্যয় হবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ও সাধারণ মানুষ যাদের গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় জীবন চালিয়ে নিতে অনেক কষ্ট হয়।
Advertisement
তহবিলে জমা পড়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মতো। কর কেটে থাকবে ২৬ লাখ টাকা। করোনার বিরুদ্ধে জিততে হলে আমাদের এই উদ্যোগ হয়তো যথেষ্ট নয়। কিন্তু যাদের সামর্থ্য আছে সবাই যদি এক সঙ্গে এগিয়ে আসেন কিংবা ১০জনও যদিও এগিয়ে আসেন, এই লড়াইয়ে আমরা অনেক এগিয়ে যাব। হ্যাঁ, এরই মধ্যে করোনা মোকাবিলায় অনেকে এগিয়ে এসেছেন। তাদের অবশ্যই সাধুবাদ জানাই।
কিন্তু বৃহৎ পরিসরে যদি আরও অনেকে এগিয়ে আসে, তাহলে আমরা এই লড়াইয়ে জিততে পারব ইনশাআল্লাহ। সেই সহায়তা হতে পারে ১০০, ৫০০০ কিংবা ১ লাখ টাকা দিয়ে। টাকা দিয়ে না হোক হতে পারে দুস্থ মানুষকে খাবার কিনে দিয়ে। আসুন পুরো দেশকে আমরা একটা পরিবার ভেবে চিন্তা করি এবং এই বিপদে সবাই সবাইকে সহায়তা করি। আল্লাহ আমাদের নিশ্চয়ই রক্ষা করবেন। ইনশাআল্লাহ।’
এআরবি/এসএএস/পিআর/জেআইএম