করোনার কারণে ১০ দিনের ছুটি মানে বাসে-ট্রেনে-লঞ্চে ভিড় করে গ্রামে যাওয়া নয়; শহরে-গ্রামে যে যেখানে আছি, সেখানেই বাসা-বাড়িতে অবস্থান করা। এ-বিষয়টাও আমরা অনেকেই জানি-বুঝি।তারপরও শুধু আবেগের কারণে অনেকেই ভিড় করে গ্রামের দিকে ছুটছি। আমাদের মনে রাখা দরকার এটা ঈদ-পার্বণের ছুটি নয়, এটা মহামারি।
Advertisement
অদৃশ্য করোনাভাইরাস কখন কার মাধ্যমে ছড়াচ্ছে, ছড়াবে আমরা কেউ জানি না। কারণ, এই ভাইরাস বিদেশফেরতদের মাধ্যমে বাংলাদেশে এসেছে, সেই বিদেশফেরতরা কার-কার সাথে মেলামেশা করেছে আমরা কেউ জানি না। মেলামেশা ছোঁয়াছুঁয়ির মাধ্যমে কোথায় থেকে কোথায় গড়াচ্ছে-গড়াবে করোনাভাইরাস কেউ বলতে পারি না। তাই আমরা ভিড় করে গ্রামে ফেরা থেকে বিরত থাকব, সেটাই সবার জন্য মঙ্গল।
অন্যদিকে আমরা যারা গ্রামে আছি, আমরা যেন ঘরেই অবস্থান করি। অযথা বাইরে ঘোরাঘুরি, পাড়ার দোকানে গা-ঘেঁষাঘেষি করে বসে আড্ডা দেয়া থেকে বিরত থাকি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখি। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীকে একেবারে গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় যাওয়া দরকার বলে মনে করি।
কারণ, অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, নিজ গ্রামের সাধারণ মানুষ নিজেদের এলাকার সচেতন মানুষের সচেতনতামূলক বিধিনিষেধ শুনতে চায় না। এক কান দিয়ে শোনে আরেক কান দিয়ে বের করে দেয়। সেনাবাহিনী এসে একবার বললেই শুনবে সেটা নিশ্চিত বলা যায়। তাই সেনাবাহিনীর সদস্যরা যেন প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় গিয়ে মানুষকে সামাজিক দূরত্ব সম্পর্কে সচেতন করেন সে আহ্বান জানাই।
Advertisement
সাধারণ মানুষের কানে কোথায় থেকে জানি একেক সময় একেক গুজব এসে প্রবেশ করে, আবার তাদের মুখ দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে সে গুজব। সেনাবাহিনী মাঠে থাকলে নানা গুজব থেকেও রক্ষা পাবে সাধারণ মানুষ।
সাথে একটু মালয়েশিয়ার কথা বলি, গত বেশ কয়েক মাস ধরে দেশে থাকলেও আমি একজন মালয়েশিয়া প্রবাসী। তাই মালয়েশিয়ার খবরাখবর নিয়মিত রাখি। সে দেশের পত্রিকা পড়ি নিয়মিত। সেখানে লকডাউন শুরু হওয়ার দুইদিন আগে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। কই, তারা তো ঈদের মতো বাসে-ট্রেনে ভিড় করে গ্রামে ফেরেনি।
কুয়ালালামপুরসহ নানা শহরে যে-যেখানে আছে সেখানেই বাসা-বাড়িতে অবস্থান করছে গত ১৮ মার্চ থেকে। সে দেশে ছয় লক্ষাধিক বাংলাদেশি প্রবাসীও নিজ-নিজ বাসায় অবস্থান করছেন। বাসার বাইরে যাওয়া একেবারে বন্ধ। লকডাউন হওয়ার আগে দুদিন জনসাধারণ দুই সপ্তাহের জন্য খাদ্যসামগ্রীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করেছে, সুপারমার্কেটগুলো খালি হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু দ্রব্যমূল্য বাড়েনি।
এইচআর/বিএ/জেআইএম
Advertisement